বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোজাজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে
একটি প্রতিনিধি দল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে তাদের
মহাসচিব স্বাক্ষরিত ওই চিঠি কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের হাতে তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা
সালমান এফ রহমানের সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের একটি ‘ফোনালাপ’ ফাঁস হওয়ার ঘটনা তুলে
ধরে বিএনপির চিঠিতে বলা হয়, “তাদের উক্ত কথোপকথনের মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন- ১৯৪৭
এর ৫(২) ধারাসহ আনুষঙ্গিক আইনসমূহের উপাদান সমৃদ্ধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য-উপাত্ত
বিদ্যমান আছে যা অনস্বীকার্য। এ বিষয়ে আপনাদের (দুদক) নির্লিপ্ততা জাতিকে হতাশ করেছে।”
এ অভিযোগের বিষয়ে নিরপেক্ষ
তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে দুদকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায়
সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের টেলিফোন আলাপের ওই অডিও ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রকল্পে কাজ
পাওয়া নিয়ে তাতে দুজনকে কথা বলতে শোনা যায়।
ওই টেপ নিয়ে সাংবাদিকদের
প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “একটা ইনোসেন্ট কনভারসেশনকে
পুঁজি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
(এলজিআরডি) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর
দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে অভিযোগে করে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার
দাবি জানানো হয়েছে বিএনপির চিঠিতে।
‘সরকারের দুর্নীতির’ তদন্ত চেয়ে দুদকে বিএনপির চিঠি
বাবর ফরিদুপর আওয়ামী লীগের
সহ-সভাপতি। এর আগে তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন।
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুদকের করা এক মামলায় ইতোমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার
করা হয়েছে।
দেশ থেকে গত পাঁচ বছরে ‘লাখ
কোটি টাকা’ পাচার হয়েছে অভিযোগ করে এর সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি
অর্থ ফেরত আনার এবং ‘দুর্নীতিবাজদের’ বিষয়ে তথ্য-উপাত্তসহ তালিকাসহ প্রকাশ করার দাবি
জানানো হয়েছে বিএনপির চিঠিতে।
অভিযোগ জমা দেওয়ার পর মোজাজ্জেম
হোসেন আলাল সাংবাদিকদের বলেন, “সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে
প্রমাণিত। সেই বিষয়টির তদন্ত করতে আমরা বলেছি। দুদককে বলেছি- এ বিষয়ে শক্তিশালী তদন্ত
করুন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব। বাংলাদেশের মানুষ আপনরাদের প্রতি আশা নিয়ে তাকিয়ে
আছে।”
এর আগে এভাবে অভিযোগ নিয়ে
বিএনপি দুদকে আসেনি, হঠাৎ কেন আসা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “তাদেরকে (দুদক) বলে এসেছি,
এরপর থেকে আমরা নিয়মিত আসব, আপনাদের সাহায্য করব। দায়বদ্ধতা থেকে আপনাদের যাতে কাজ
হয়। সাধারণ মানুষের কাছেও আপনারা পরিষ্কার থাকবেন।”
বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে
চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “উনারা কয়েকজন এখানে একটি লিখিত
অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। যে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। এটা রেজিস্ট্রারে রিসিভ
করা হয়েছে। দুদক আইন ও বিধিমালার অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।”
বিএনপির চিঠির বিষয়বস্তু
জানতে চাইলে এই দুদক কর্মকর্তা বলেন, “দুটি লিখিত অভিযোগে দিয়ে গেছেন, তাতে কী আছে
তা খুলে দেখিনি।”