সোমবার স্থানীয়
সময় দুপুর ২টায় পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে
ভোট গ্রহণ হবে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনই একমাত্র
এজেন্ডা।
পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ মাহমুদ কুরেশি রোববার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে এ দুজনই শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পার্লামেন্টের যে বিরোধীদলীয় জোট কাজ করেছে তাদের নেতা শাহবাজ শরিফ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন পেয়ে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচিত হলে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হবেন। নওয়াজ তিন মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। শেষবার ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
এতদিন শাহবাজের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) বা পিএমএলএন দেশটির অন্যতম প্রধান বিরোধীদল হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে।
আরেক বিরোধীদলীয় নেতা পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ইতোমধ্যেই শাহবাজের প্রতি সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তিন মেয়াদে পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শাহবাজকে পাকা ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কয়েকদিন ধরে চলা বিভিন্ন নাটকীয় ঘটনা ও সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপর পর রোববার প্রথম প্রহরে পার্লামেন্টের অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বিদায় নেন ইমরান (৬৯) ।
৩ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব আটকে দিয়েছিলেন তিনি। পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন তেহরি-ই-ইনসাফ দলীয় ভাইস স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দিয়েছিলেন। এরপর ইমরানের পরামর্শে দেশের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি পার্লামেন্টে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। এতে পাকিস্তানে আগাম নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ঘটনা দেখে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির সিদ্ধান্তকে সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করে জাতীয় পরিষদ পুনর্বহাল করে সর্বোচ্চ আদালত। অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির জন্য স্পিকার আসাদ কাইসারকে অধিবেশন ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের নির্দেশে ৯ এপ্রিল সকালে পার্লামেন্টের অধিবেশ শুরু হওয়ার পর দিনভর বিভিন্ন নাটক ও বারবার অধিবেশন মুলতবির মাধ্যমে সময় ক্ষেপণের পর মধ্যরাতের ভোটাভুটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মধ্য দিয়ে ইমরানের বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়।