ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সোমবার রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে আবাহনী জিতেছে ১ রানে।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে জাকের আলির ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ও আফিফ হোসেনের ঝড়ো ফিফটিতে ৭ উইকেটে ৩১১ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে গত তিন আসরের চ্যাম্পিয়নরা। গাজী গ্রুপ শেষ বলে থামে ৩১০ রানে।
কিপার-ব্যাটসম্যান জাকের তিনে নেমে ১০৩ বলে ১৩ চার ও দুই ছক্কায় খেলেন ১০৯ রানের চমৎকার ইনিংস।
গাজী গ্রুপকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেওয়া মেহেদি মারুফ ৬৭ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন ৮২ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস। বোলিংয়ে ভালো করা আল আমিন জুনিয়র চারে নেমে তোলেন ঝড়। ছয়টি করে ছক্কা ও চারে ৬৬ বলে করেন ৯২ রান।
তবে সবাইকে ছাড়িয়ে ব্যবধান প্রায় গড়েই দিচ্ছেলেন ১০ নম্বরে নামা হাবিব। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। যুব বিশ্বকাপজয়ী পেসার তানজিম হাসানের প্রথম বলে রান আউট হয়ে যান কাজী অনিক। হাবিব যখন স্ট্রাইক পান, তখন চার বলে প্রয়োজন ১৬। তৃতীয় বলে ব্যাটের কানায় লেগে থার্ড ম্যান দিয়ে আসে চার। পরের দুই বলে পয়েন্ট দিয়ে মারেন দুটি বাউন্ডারি।
কিন্তু হাবিব মেটাতে পারেননি শেষ বলে ৪ চারের সমীকরণ। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে জয়ের খুশিতে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সহজাত ক্রিকেট খেলছিলেন আবাহনী দুই ওপেনার। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন মুনিম শাহরিয়ার, অন্য প্রান্তে রানের জন্য সংগ্রাম করছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ২৭ বলে ২৭ রান করা নাঈমকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন গুরিন্দার সিং।
জাকের ইনিংসের শুরুতে ছিলেন সাবধানী। তার সঙ্গে জুটির রান পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরপরই বিদায় নেন নাঈম। থমকে থাকা রানের গতিতে দম দেন জাকের। তার সঙ্গে ৯৩ রানের জুটিতে হনুমা বিহারির অবদান ৪১ বলে ২৮।
ক্রিজে গিয়েই বোলারদের উপর চড়াও হন আফিফ। দ্রুত জাকেরে সঙ্গে জমে যায় তার জুটি। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে জাকের বিদায়ে ভাঙে ৭.১ ওভার স্থায়ী ৭৭ রানের জুটি। পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফিরে যান আফিফও। শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের ব্যাটে তিনশ ছাড়ায় আবাহনীর রান।
৪৩ রানে ৩ উইকেট নেন আল আমিন জুনিয়র। দুটি করে উইকেট নেন গুরিন্দার ও কাজী অনিক।
বড় রান তাড়ায় মারুফের ব্যাটে শুরুটা ভালো করে গাজী গ্রুপ। মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে ৫২ ও ফরহাদ হোসেনের ৭৯ রানের দুটি চমৎকার জুটিতে দলকে ১ উইকেটে ১৩১ রানের ভালো ভিতের উপর দাঁড় করান।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথে থাকা মারুফকে বোল্ড করার পর ফরহাদকে বিদায় করেন তানভির ইসলাম। পরে দ্রুত রান আউট হয়ে যান গুরিন্দার।
দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর কোনো প্রভাব পড়তে দেননি আল আমিন জুনিয়র ও আকবর আলি। তাদের ব্যাটে দ্রুত বাড়তে থাকে রান। তিন ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৯ রান করা আকবরকে বিদায় করে ১১৩ রানের জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক।
আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি পাননি আল আমিন জুনিয়র। তাকে বোল্ড করে দিয়ে আবাহনীকে ম্যাচে ফেরান সাইফ। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার দ্রুত বিদায় করেন মেহরব হাসান ও জুবারুল ইসলামকে। এরপর দলকে অবিশ্বাস্য এক জয়ের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন হাবিব। শেষ বলে পারেননি স্রেফ একটুর জন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ৩১১/৭ (মুনিম ২৭, নাঈম শেখ ৩৫, জাকের ১০৯, বিহারি ২৮, আফিফ ৫০, মোসাদ্দেক ২৬, শামীম ৭, সাইফ উদ্দিন ১৮*, তানজিম ২, তানভীর ১*; আলমগীর ৪-০-২৫-০, হাবিব ১০-১-৫৫-০, মাহমুদুল ১০-১-৪৭-০, গুরিন্দার ১০-০-৬৩-২, আল আমিন ৭-০-৪৩-৩, অনিক ৯-০-৭৭-২)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৫০ ওভারে ৩১০ (মারুফ ৮২, মাহমুদুল ২১, ফরহাদ ২৭, আল আমিন ৯২, গুরিন্দার ২, আকবর ৩৯, জুবারুল ১৫, মেহেরব ১১, অনিক ০, হাবিব ১৪*, আলমগীর ১; সাইফ উদ্দিন ১০-০-৫৬-৩, সানি ১০-০-৫৫-০, তানজিম ৯-০-৮৯-০, তানভির ১০-০-৬০-২,, মোসাদ্দেক ১০-১-৪২-১, আফিফ ১-০-৬-০)
ফল: আবাহনী লিমিটেড ১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জাকের আলি