শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের রোমাঞ্চকর ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৪ রানে হারাল শেখ জামাল। ২০৩ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে ১৯৮ রানে থামিয়ে দিল তারা।
দারুণ এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল ইমরুল কায়েসের দল। ৯ ম্যাচে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট তাদের।
শেখ জামালের হয়ে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ম্যাচের সেরা হন জিয়াউর। ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ৫৭ রানের ইনিংস খেলার পর স্রেফ ১৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। সাইফ হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৬১।
তাদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিরও। শেষ ওভারে যখন
৮ রান চাই প্রতিপক্ষের, দুর্দান্ত বোলিংয়ে কেবল তিন রান দিয়ে দুই উইকেট তুলে নেন তিনি।
রূপগঞ্জ টাইগার্সের জয়ের আশা জাগানো আসিফ খেলেন ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৯৫ রানের ইনিংস। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার আগের সেরা ছিল অপরাজিত ৯১।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে শেখ জামাল। একটি চল্লিশ ছোঁয়া জুটিও পায়নি তারা।
তৃতীয় ওভারে সৈকত আলিকে বোল্ড করার পর নাসুম আহমেদ ফিরিয়ে দেন ইমরুলকে (১৬)। জহুরল ইসলাম কট বিহাইন্ড হন ফরহাদ রেজার বলে। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্ট দেখা যায় ব্যাটসম্যানকে। ইঙ্গিত করেন ব্যাট সরিয়ে নেওয়ার।
সতীর্থদের আসা যাওয়ার মাঝে এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে ৮৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন সাইফ। তাকে এলবিডব্লিউ করে বেশিদূর যেতে দেননি নাসুম।
১১২ রানে ৬ উইকেট হারানো শেখ জামালের রান বাড়ান জিয়াউর। পাকিস্তানের সাদ নাসিমকে ছক্কায় উড়িয়ে ৪৫ বলে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি। মূলত তার ইনিংসেই দুইশ পার করে দলটি।
জবাব দিতে নেমে জিয়াউরের প্রথম ও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুই উইকেট হারায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। জাকির হাসান ও ফজলে মাহমুদ দুইজনই ফেরেন শূন্য রানে।
ইমরানউজ্জামানকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আসিফ। দুইজনেই সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। ইমরানউজ্জামানের বিদায়ে ভাঙে ৪২ রানের জুটি।
এরপর মার্শাল আইয়ুব ও নাসিমের সঙ্গে দুটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি গড়েন আসিফ। তাতে জয়ের সম্ভাবনা প্রবল হতে থাকে দলটির।
৮৪ বলে ফিফটি করে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দুয়ারে থাকা আসিফের তিন অঙ্ক ছোঁয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে দেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি। তার বিদায়ের পরও অবশ্য জয় নাগালেই ছিল রূপগঞ্জ টাইগার্সের। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ২৪ বলে ২৯ রান প্রয়োজন ছিল তাদের।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সমীকরণ মেলাতে পারেনি দলটি। বলা যায়, মেলাতে দেয়নি মৃত্যুঞ্জয়। শেষ ওভারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দলকে জয়ের আনন্দে ভাসান এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব: ৪৮.১ ওভারে ২০২ (সৈকত ২, সাইফ ৬১, ইমরুল ১৬, জহুরুল ৫, রবিউল ২০, তাইবুর ০, রাসুল ১৯, জিয়াউর ৫৭, সানজামুল ৩, মৃত্যুঞ্জয় ১০, আরিফ ৩*; নাসুম ১০-২-২২-৪, মুকিদুল ৯.১-২-৫৪-২, শরিফউল্লাহ ২-০-১৮-০, রেজা ১০-০-৩৭-২, এনামুল জুনি. ১০-১-২৯-২, নাসিম ৭-০-৪২-০)
রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ১৯৮/৮ (ইমরানউজ্জামান ২০, জাকির ০, ফজলে মাহমুদ ০, আফির ৯৫, মার্শাল ২৮, নাসিম ৩৭, রেজা ৩, শরিফউল্লাহ ৩, নাসুম ১*, মুকিদুল ০*; রাসুল ১০-২-২৮-১,জিয়াউর ৭-২-১৬-২, আরিফ ৮-১-৩২-১, মৃত্যুঞ্জয় ৮-০-৩৭-৩, সানজামুল ৫-০-৩২-০, তাইবুর ৬-০-২১-০, রবিউল ৬-০-২৬-১)
ফল: শেখ জামাল ৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জিয়াউর রহমান।