ক্যাটাগরি

শাহবাজ শরিফ: মুখ্যমন্ত্রী থেকে পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রে

পাকিস্তানের রাজনীতি গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল। নানা ঘটনা এবং নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ইমরান খান। গত শনিবার মধ্যরাতে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হয় তাকে।

ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করে সোমবার পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফকে বেছে নেয়।

শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই।

দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ লন্ডনে নির্বাসিত জীবন বেছে নেওয়ার পর শাহবাজই পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ)- পিএমএল(এন) এর দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন।

শাহবাজের ভাই নওয়াজকে সরিয়েই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ইমরান।

৭০ বছরের শাহবাজ পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী। তিনি এখন একটি নতুন সরকার গঠন করবেন। ২০২৩ সালের অগাস্টে পাকিস্তানে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এ সরকারই ক্ষমতায় থাকবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিক

লেখাপড়া শেষ করে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন শাহবাজ। ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

ওই সময় ‍তিনি ব্যবসার পাশাপাশি বড় ভাই নওয়াজ শরিফ এবং তার দলের রাজনীতির প্রচারেও কাজ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে শরিফ পরিবার ও তাদের দলের উপর নজর রাখা লাহোরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সালমান গনি বিবিসিকে বলেন, ‘‘শাহবাজ কঠোর পরিশ্রমী একজন মানুষ। তিনি প্রথম থেকেই তার পরিবারের কাছে নিজেকে পরিশ্রমী এবং দক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছেন। ব্যবসায় সাফল্যের পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।”

১৯৮৮ সালে নির্বাচনে জিতে তিনি প্রথমবারের মত পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হন। ১৯৯০ ও ৯৩ সালেও তিনি পুনঃনির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে শাহবাজ বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী

১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল এবং প্রভাবশালী প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ। ওই বছর বড় ভাই নওয়াজ শরিফ দ্বিতীয়বারের মত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ‍দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

পাকিস্তানের সাংবাদিক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক মুজিব-উর-রহমান শামি বিবিসিকে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ পাঞ্জাবে একটি ভাল দল গঠন করেছিলেন।”

পাঞ্জাবের উন্নয়নে শাহবাজ সেখানে বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কাজও করছিলেন। কিন্তু ওই সময়ই তার সরকারের অকাল পতন ঘটে। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন জেনারেল পারভেজ মুশাররফ। ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। দুই ভাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

মুশাররফের সাথে চুক্তি ও নির্বাসন

অভিযোগ আছে, ২০০০ সালে শরিফ পরিবার তৎকালীন সেনাশাসক পারভেজ মুশাররফের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন। যে চুক্তির খবর ফাঁস হওয়ার পর শরিফ পরিবার বেশ বেকায়দায় পড়ে যায়। যদি তারা বার বার মুশাররফের সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। ফলে সৌদি আরবে নির্বাসিত জীবন বেছে নিতে বাধ্য হন শাহবাজ।

সাংবাদিক শামি বিবিসিকে বলেন, ‘‘নওয়াজ শরিফ ও অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে ওই সময় যেসব মামলা হয়েছিল, তার কোনটিতেই শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি।

“তিনি কোনভাবেই দেশ ছাড়তে চাননি। বরং দেশে থেকে যেতে জোর চেষ্টা করেছিলেন।”

সৌদি আরব থেকেও শাহবাজ বেশ কয়েকবার দেশে ফেরার চেষ্টা করেন। পরে পাঞ্জাবের সাবেক গভর্নর চৌধুরী সারওয়ারের মধ্যস্থতায় দুইভাই সৌদি আরব থেকে লন্ডন যান।

ফের পাঞ্জাবের ক্ষমতায় শাহবাজ

সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ২০০৭ সালে শরিফ পরিবার পাকিস্তানে ফিরেতে সক্ষম হয়। তার পরের বছরই ছিল সাধারণ নির্বাচন।

কিন্তু একটি বিচার বহির্ভূত হত্যা মামলা থাকায় শাহবাজ ওই সময় কোনো পর্যায়ের নির্বাচনেই অংশ নিতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে ১৯৯৮ সালে করা একটি এফআইআর এ বলা হয়, তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় পুলিশকে একটি এনকাউন্টারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তার অনুপস্থিতিতে ২০০৩ সালে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত তার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করে। ওই নোটিসের জবাব দিতে শাহবাজ ২০০৪ সালে পাকিস্তানে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দর থেকেই তাকে ফেরত পাঠানো হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী শাহবাজ শরিফ, কে তিনি
 

২০০৭ সালে দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নিতে ওই মামলায় জামিন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শাহবাজ। কিন্তু তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। যদিও নির্বাচনের পর তিনি বিচারে খালাস পান এবং উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে জেতেন। আবারও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

কিন্তু সে বছরই সুপ্রিম কোর্ট তাকে অযোগ্য ঘোষণা করেন। যার বিরুদ্ধে আপিল করে দুই মাস পর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ফেরত পান শাহবাজ।

চীনের প্রিয়পাত্র শাহবাজ

২০১৩ সালে ভোটে জিতে টানা দ্বিতীয়বারের মত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ। ওই সময় তিনি ‘কঠোর প্রশাসক’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

সাংবাদিক সালমান গনি বিবিসিকে বলেন,  মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে শাহবাজ প্রতিদিন ভোর ছটায় ঘুম থেকে উঠতেন। সব দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ওপর ওই সময়েই কার্যালয়ে হাজির থাকার নির্দেশ ছিল।

“আমার মনে আছে, তখন ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান চলছিল এবং সব চিকিৎসকদের উপর নির্দেশ ছিল ভোর ৬টার মধ্যে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার। কারোরই দেরি করার কিংবা গরহাজির থাকার জো ছিল না। শাহবাজ গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতেন।”

সাংবাদিক শামির বলেন,  শাহবাজ নিজের জন্য পাঁচ বছরের একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি দূর করা। এজন্য তিনি চীনের সাহায্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পে হাত দেন। ওই প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত মেয়াদের আগেই শেষ করা হয়।

শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী
 

এই কারণে ওই সময়ে ‘পাঞ্জাবের গতি’  কথাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

“বিশেষ করে সময়ের আগে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কারণে চীনারা তার উপর খুবই খুশি ছিল।”

পাকিস্তানের বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করার কৃতিত্ব ছিল শাহবাজ শরিফের এবং ২০১৩ সালের নওয়াজ শরিফের দলের জয়ের পেছনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করেন সাংবাদিক সালমান।

বলেন, ‘‘চীন শাহবাজের কাজের গতিতে মুগ্ধ হয়েছিল এবং তার প্রশংসা করতো। তিনি নিজেও চীনের কাজ পছন্দ করতেন। যে কারণে বহুবার তিনি চীন সফর করেছেন।”

বিদ্যুৎ ছাড়াও স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের কিছু প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছেন শাহবাজ। তার সময়ের দুটো বড় প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিরোধীরা তীব্র সমালোচনা করেছিল।

প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরে যানজট কমাতে শাহবাজ মেট্রো বাস চালানোর প্রকল্প হাতে নেন।

ওই সময়ে কেন্দ্রে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন ইমরান খান। শাহবাজের প্রকল্পের সমালোচনা করে ইমরান সেটিকে ‘জঙ্গল বাস’ বলেছিলেন।

কিন্তু সব সমালোচনাকে উপেক্ষা করে দক্ষহাতে সফলভাবে মেট্রো বাস প্রকল্পের কাজ শেষ করেন শাহবাজ।

যা দেখে উৎসাহিত হয়ে মুলতান, রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদেও একই রকম প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয়। এমনকি ইমরানের প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়াতেও এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

অরেঞ্জ লাইন ট্রেন চালু করতে গিয়েও বিরোধীদের কাছ থেকে একইরকম সমালোচনার মুখে পড়েন শাহবাজ শরিফ।

বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, ওই প্রকল্পটি এতই ব্যয়বহুল যে ভর্তুকি দিয়ে শেষ পর্যন্ত এটিকে টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে।

শেষ পর্যন্ত ইমরান খানের পিটিআই সরকারের অধীনেই প্রকল্পটি সমাপ্ত হয় এবং সেটি এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে।

প্রদেশ থেকে কেন্দ্রে

রাজনীতিতে সবসময়ই বড় ভাই নওয়াজের ছায়াতলে দ্বিতীয় সারির নেতার ভূমিকায় থেকেছেন শাহবাজ শরিফ।

শাহবাজ সম্পর্কে সাংবাদিক শামি বিবিসিকে বলেন, ‘‘শাহবাজ কখনোই গণমানুষের নেতা ছিলেন না  বরং তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক ছিলেন, যিনি দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ্বে জড়ানোর পক্ষপাতী ছিলেন না।”

যেহেতু তিনি জনগণের কাছে বড় ভাই নওয়াজের মত জনপ্রিয় ছিলেন না। এমন কী ভাইয়ের মেয়ে মরিয়ামের মতও মানুষ তার সমাবেশে জড়ো হত না। তাই শরিফ পরিবারের হয়েও তিনি কিছুটা আড়ালেই থেকে গিয়েছিলেন।

কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় ২০১৭ সালে, যখন পানামা পেপার্স ফাঁসের জের ধরে সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজকে আজীবনের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হবার অযোগ্য ঘোষণা করে।

নওয়াজ নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার পর শাহবাজ দলীয় প্রধানের পদ পান ঠিকই,  কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হন শহিদ খাকান আব্বাসি।

ওদিকে, কিছুদিন জেল খাটার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন চলে যান নওয়াজ। তারপর আর দেশে না ফেরায় তার শূন্যস্থান পূরণের জন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে পাঞ্জাব থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রের রাজনীতিতে যোগ দেন শাহবাজ।

সে বছর নির্বাচনে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলের প্রধান হিসেবে বিরোধী দলের নেতা হন।

দুর্নীতির অভিযোগ

শরিফ পরিবারের অন্যান্যদের মত শাহবাজের বিরুদ্ধেও দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন মামলায় তিনি সাজা পাননি।

এই শাহবাজের নেতৃত্বেই বিরোধী দলগুলো ইমরানে খানের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। শাহবাজই ইমরানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

ইমরান নিজেকে বাঁচাতে নানা কৌশল খাটালেও শেষ পর্যন্ত শাহবাজের সঙ্গে পেরে উঠেননি। যদিও ইমরানের অভিযোগ তিনি ‘বিদেশি চক্রান্তের‘ শিকার হয়েছেন। বিদেশি শক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে শাহবাজ এসব করছেন।

ইমরান অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর পার্লামেন্ট নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার আগেই শাহবাজ ঘোষণা করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

এটা ঠিক যে, পরিস্থিতি যেভাবে এগুচ্ছিল তাতে যে কারো পক্ষেই এটা অনুমান করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সরাসরি নিজের নাম ঘোষণা করা বেশ সাহসী পদক্ষেপ।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ বেশ সফল। কিন্তু প্রদেশ আর কেন্দ্রের রাজনীতি এক নয়। কেন্দ্রে শাহবাজকে আরো অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।

আর পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার এখন পর্যন্ত কারো জন্য সুখকর হয়নি। দেশটির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।

যদিও শাহবাজ এবার পূর্ণ পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য নয় বরং বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের অগাস্টে, অর্থাৎ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন।

কিন্তু এই সময়েই তাকে টালমাটাল অর্থনীতির পাকিস্তানকে সামাল দিতে হবে। সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে লড়াই।

ইমরানের দাবি মতে, চীন এবং রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হয়েছেন। এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘চক্রান্তেই’ তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে।

বিশ্ব রাজনীতিতে এখন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ঐতিহ্যগতভাবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র ঘেঁষা। কিন্তু সম্প্রতি দেশটি কয়েকটি সরকার প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠতে দেখা গেছে। শাহবাজ নিজেও চীন ঘেঁষা বলে পরিচিত। ইমরান যে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন, সেই সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে শাহবাজ কতটা সফল হন এখন সেটাই দেখার বিষয়। একই সঙ্গে শাহবাজকে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীকেও সামাল দিতে হবে।

বড় ভাই নওয়াজকে একবার ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল সেনাবাহিনী। যদিও শাহবাজ বরাবর সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতে নারাজ ছিলেন। ভাইকেও সেই পরমার্শই দিয়ে এসেছেন বলে জানা যায়। এবার নিজে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কতটা সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারেন সেটার উপরও তার প্রধানমন্ত্রীত্বের চেয়ার ঠিক থাকা অনেকটা নির্ভর করছে।