ক্যাটাগরি

২৫০০ ফেইসবুক আইডি ‘হ্যাক’: ‘ব্ল্যাকমেইলে’ পঞ্চম শ্রেণি পাস যুবক

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ রোববার রাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে লিটন ইসলাম (২৮) নামের এ যুবককে গ্রেপ্তার করে।

অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক জানান, লিটন প্রথমে অনলাইনে ফিশিং লিংক তৈরি করে ছবি ও ভিডিও যুক্ত করে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে।

“শেয়ার করা লিংকে ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার চেষ্টা করামাত্রই ওই পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেইম হ্যাকারের কাছে চলে যায়। হ্যাকার তখন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে অ্যাকাউন্টটি দ্রুত তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। তারপর নিয়ন্ত্রণে নেওয়া আইডির মেসেঞ্জারে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি বা ভিডিও সংগ্রহ করে ডাউনলোড করে তা সংরক্ষণ করে।“

তিনি বলেন, “পরবর্তীতে লিটন টার্গেট ব্যক্তিকে মেসেঞ্জারে বার্তা প্রদান করে হ্যাকিংয়ের বিষয়ে অবগত করে টাকা দাবি করে। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি দিত।”

এ বছরের ২৩ জানুয়ারি আনোয়ার হোসেন নামে একজন ঢাকার কদমতলী থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার ছায়া তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হ্যাকারের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল জানান।

গ্রেপ্তারের সময় তার কাছে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারের একটি সিপিইউ, দুইটি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া প্রায় ২৫০০ দেশি-বিদেশি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন করার প্রয়োজনীয় ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের তথ্যও মিলেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার লিটন জানিয়েছেন, তিনি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। এরপর কম্পিউটারের বিভিন্ন বিষয় শিখেছেন। গ্রাফিক্সের কাজও জানেন তিনি।

হ্যাক করা আইডিধারীদের কাছ থেকে এ যুবক বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে স্বীকার করেছেন।

আরও জিজ্ঞাসাবাদে এ যুবককে একদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

 

এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কিছু পরামর্শ দিয়েছে-

>> সাইবার স্পেসে অপরিচিত কোনো আইডি থেকে পাঠানো কোনো লিংকে প্রবেশ না করা।
>> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত কোনো আইডির সঙ্গে বন্ধুত্ব না করা।
>> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথাযথ সিকিউরিটি সেটিংস ব্যবহার করা।
>> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো স্পর্শকাতর তথ্য, ছবি বা ভিডিও শেয়ার না করা।