মারিউপোলে রুশ বাহিনী এরই মধ্যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মারিউপোল অবরোধ করার সময় রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে খবরটি সত্যি কিনা কিইভ সরকার তা যাচাই করে দেখছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেইনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার। টিভিতে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘যা শোনা যাচ্ছে, তাতে সেগুলো ফসফরাস জাতীয় গোলাবারুদ হতে পারে।”
সোমবার রাতেই ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, মারিউপোলে নতুন করে আক্রমণের জন্য রাশিয়া দনবাস অঞ্চলের পূর্ব দিকে সেনা জড়ো করছে। তারা রাসায়নিক অস্ত্রের আশ্রয় নিতে পারে। তবে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে কিনা সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
ইউক্রেইনের সেনারা মারিউপোলের আজোভস্টাল শিল্পাঞ্চলে আশ্রয় নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যদি রুশ বাহিনী আজোভস্টাল দখল করে তবে তারা পুরো মারিউপোলের উপর নিয়ন্ত্রণ পাবে।
পশ্চিম এবং পূর্বে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে মারিউপোল গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল।
ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর পর রুশ বাহিনী যে কয়টি নগরীতে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে তার অন্যতম মারিউপোল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার টানা বোমাবর্ষণে নগরীটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
সেখানে যুদ্ধে কয়েক হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। মারিউপোল অবরোধ করার সময় রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যও ।
যদি রাশিয়া সত্যিই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে তবে এর জবাব দেয়ার ‘সব উপায়ই আমাদের হাতে আছে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ব্রিটিশ জুনিয়র প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস হ্যাপি।
রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের হয়েছে কিনা সে বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
তবে পূর্ব ইউক্রেইনে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মারিউপোলে কোনো ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানায় সংবাদ সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স।
তবে যদি সত্যিই তদন্তে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়, সেটি নিশ্চিতভাবেই ইউক্রেইন যুদ্ধে বিপজ্জনক নতুন মোড় হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ইউক্রেইন বহু মৃত্যু দেখেছে, যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকরাও আছেন।
দেশটির চার কোটি ৪০ লাখ মানুষের এক চতুর্থাংশ প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। নগরীগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।