এক সদস্যের তদন্ত কমিটির দায়িত্ব পাওয়া মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার মঙ্গলবার এ কথা জানান।
একই সঙ্গে ক্লাসে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও গণিতের এই শিক্ষক।
রোববার মুক্তিলাভের পর হৃদয় মণ্ডল চিকিৎসার জন্য সরাসরি ঢাকায় যান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তার স্ত্রী ও সন্তানরা বিদ্যালয় কম্পাউন্ডে কোয়ার্টারেই রয়েছেন। তার ছেলে ক্লাসও করছে ওই বিদ্যালয়ে।
এদিকে, এই ঘটনায় শিক্ষা অধিদপ্তর গঠিত এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার এই তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন।
তিনি জানান, তদন্ত কমিটি বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার পঞ্চসারের বিনোদপুর রামকমুার উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্ত করবে। তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত থাকতে মঙ্গলবার তিনি সংশ্লিষ্টদের পত্র দিয়েছেন।
অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার বলেন, সেদিন ক্লাসটিতে থাকা শিক্ষার্থী, মোবাইলের অডিও রেকর্ড করা এবং অভিযোগ দেওয়া ছাত্র, মামলার বাদী এবং সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকার জন্য পত্র দিয়েছেন তিনি। এই পত্রের অনুলিপি দিয়েছেন শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, মুন্সীগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিস, বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং বিদ্যালয়টির অঙ্ক ও বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে।
মামলার পেছনে টিউশনের রেষারেষি? হৃদয় মণ্ডলের তেমনই ইংগিত
পুরো পরিবারের নিরাপত্তা চান হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী
১৯ দিন পর জামিন পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল
‘ফাঁসানো হয়েছে’, অভিযোগ হৃদয় মণ্ডলের পরিবারের
জজ আদালতেও জামিন মেলেনি বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের
আব্দুল হাই তালুকদার জানান, পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তিনি কাজ শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্টদের পত্র দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছেন।
হৃদয় মণ্ডল সরেজিমন এই তদন্তকালে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে তার বক্তব্য প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন, বলেন আব্দুল হাই।
এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ যথাসময়ে উক্ত ক্লাসের শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত করার বিষয় নিশ্চিত করেছেন বলে আব্দুল হাই জানান।
এ বিষয়ে হৃদয় চন্দ্র মন্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তদন্ত কমিটির দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক আব্দুল হাই তাকে ফোন করেছেন। তিনি বুধবার মুন্সীগঞ্জ যাবেন এবং তদন্ত কমিটির সামনে বক্তব্য উপস্থপন কবেন।
ওইদিন তিনি ক্লাসে যোগ দেবেন বলেও জানান।
চলতি বছরের ২০ মার্চ হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বিজ্ঞান ক্লাস নেওয়ার সময় তার কথা অডিও রেকর্ড করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
২২ মার্চ একদল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে; তাদের সঙ্গে কিছু বহিরাগতও যুক্ত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে হৃদয় মণ্ডলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ওই রাতেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ধর্মী বিশ্বাসকে অপমানিত করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ২৯৫/২৯৫ক ধারায় মুন্সীগঞ্জ থানায় বিদ্যালয়টির অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রিশিয়ান) মো. আসাদ মামলা করেন এবং হৃদয় মন্ডলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।