ক্যাটাগরি

ডায়রিয়া: জায়গা নেই রাজবাড়ী হাসপাতালে

জেলা সদর
হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেক রোগী হাসপাতালের বারান্দা, মেঝে এমনকি হাসপাতালের
বাইরে খোলা জায়গায় থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছে।

সরেজমিন
সোমবার দুপুরে সদর হাসপাতালে দেখা যায়, পনেরো-বিশ মিনিট পরপর রিকশা, অটোরিকশা এসে দাঁড়াচ্ছে
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে। এরপর স্বজনরা ধরাধরি করে গাড়ি থেকে নামাচ্ছেন
ডায়রিয়া রোগীকে। পরে হাসপাতালের হুইল চেয়ারে করে তাদের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছে।

আক্রান্তরা
কেউ একদিন আগে, কেউবা দুইদিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান স্বজনেরা।

হাসপাতালটিতে
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা মাত্র ১২। অথচ রোগী চাপ অনেক বেশি। যারা সিট পাননি তারা
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মেঝে ও ওয়ার্ডের বাইরে মাদুর বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডায়রিয়া
ওয়ার্ডের বাইরে গাছের নিচে মাদুর বিছিয়ে ছেলে চিকিৎসা নিচ্ছে; পাশে আছেন মা সালেহা
বেগম।

তিনি বলেন,
“গতকাল থেকে পাতলা পায়খানা। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে স্যালাইন ও ওষুধ খেয়েও কমে নাই।
সকালে হাসপাতালে এসেছি। এখানে এসে কোনো সিট পাই নাই। বাধ্য হয়েই ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে
গাছের নিচে মাদুর বিছিয়ে ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছি।”

উপজেলার
ভবদিয়া থেকে নাজমা বেগম এসেছেন তার ৩ বছরের নাতনি সামিয়াকে নিয়ে।

নাজমা বলেন,
“গতকাল থেকে হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হয়। তারপর থেকে ডায়রিয়া শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি
করাই। কিন্তু হাসপাতালে কোনো সিট খালি নেই। ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও জায়গা নেই। তাই ওয়ার্ডের
বাইরে মাদুর বিছিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি। এভাবে থাকতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। পাশে ড্রেন থাকায়
দুর্গন্ধ আসে।”

সদর হাসপাতালের
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স আইনুন নাহার জানান, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা
মাত্র ১২টি। শয্যা পূর্ণ হয়ে গেলে ফ্লোরে ১০ জনকে রাখার মতো ব্যবস্থা আছে। গত তিন দিনে
৬৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে । রোববার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২২ জন রোগী। সোমবার ২২
জন রোগী ভর্তি হয়।

“এ কারণে
কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালের বাইরে রাখতে হয়েছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও। বর্তমানে ২২ জন রোগী
হাসপাতালে ভর্তি আছে।” বেড থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে
বলে জানান আইনুন নাহার।

রাজবাড়ীর
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে
গেছে। ডায়রিয়া রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যপ্ত ওষুধ ও খাবার স্যালাইন আছে।

“বেডের
স্বল্পতা থাকার কারণে অনেক রোগীকেই বেড দিতে পারছি না, যে কারণে তাদের মেঝেতে থেকে
চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। প্রতিটা রোগী যেন বেড পায় তার ব্যবস্থা দ্রুত করা হবে।”