মঙ্গলবার মোরেলগঞ্জ
উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এরাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়
বলে পুলিশ জানিয়েছে।
একই দিন মোরেলগঞ্জ
থানায় এই ঘটনায় মামলা করেছেন আমুরবুনিয়া গ্রামের রমনী বিশ্বাস। মামলায় ২০ জনের নাম
উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮০/৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই গ্রামের এক যুবক
ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননা করেছেন অভিযোগ তুলে সোমবার রাতে তার বাড়িতে একদল লোক ভাংচুর
করে। একই সময়ে তার বাড়ির অদূর একটি মন্দিরেও হামলা চালায় একদল লোক।
সোমবার রাতেই ফেইসবুকে
পোস্ট দেওয়া ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
মোরেলগঞ্জ থানার ওসি
সাইদুর রহমান বলেন, আমুরবুনিয়া গ্রামে হিন্দুবাড়ি ও মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের
অভিযোগে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ১৭ জনকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের
থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জড়িত অন্যদের ধরতে
পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমুরবুনিয়া গ্রামে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তা খুবই
দুঃখজনক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা কেউই পার পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন
কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত
পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল) আসিফ ইকবাল বলেন, ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে
একদল বিশৃঙ্খল জনতা বাড়িঘর, মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ঘটনা জানার পরপরই অভিযোগ
ওঠা যুবককে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, খবর পেয়ে
পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে আসেন। অল্প সময়ের মধ্যে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এখানকার
পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ এই ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে।
তিনি জানান, এলাকায়
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ টহল দিচ্ছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি
স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দেবে।
মোরেলগঞ্জের উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সপ্তাহখানেক
আগে এক যুবক ভারতে অবস্থানকালে ফেইসবুকে ‘ইসলাম ধর্ম ও নবীকে কটূক্তি করে’ একটি
পোস্ট দেন। সম্প্রতি ওই যুবক দেশে ফিরলে ওই ফেইসবুক পোস্ট নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে
আলোচনা শুরু হয়।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য সোমবার সাবেক
ইউপি সদস্য আব্দুর মালেক গাজী ও স্থানীয় লোকজন বৈঠক করেন। ওই বৈঠককে সেই যুবক
ফেইসবুকে তার পোস্টের জন্য ক্ষমা চাইলে মিটমাট হয়ে যায়।
কিন্তু রাত ৮টার দিকে
একদল লোক ওই যুবকের ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে’ মিছিল নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়
এবং ভাঙচুর করে। সে সময় একটি খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার
আরিফুল হক বলেন, “ওই যুবকের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি মন্দিরেও ভাঙচুর করা
হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তাকে আটক করে।”