ক্যাটাগরি

আটকে গেল সম্রাটের মুক্তি

ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান বুধবার এ মামলায় তার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এদিন শুনানিতে ‘অসুস্থতা, দীর্ঘ করাবাস এবং মামলার ত্রুটি বিবেচনায়’ জামিন দেওয়ার আর্জি জানান।

দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত নথি পর্যালোচনার জন্য আদেশ অপেক্ষমাণ রাখে। পরে আদেশে সম্রাটের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়।

এ মামলায় এদিন অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। সম্রাটকে কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

তবে শেষ পর্যন্ত আর অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়নি। আসামিপক্ষের আবেদনে ১১ মে শুনানির নতুন তারিখ রেখেছেন বিচারক।

সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার জানা মতে, সম্রাটের বিরুদ্ধে চারটি মামলা চলমান রয়েছে। মানি লন্ডারিং, অস্ত্র ও মাদক- এই তিনটি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। তবে দুদকের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের এই মামলায় জামিন নাকচ হওয়ায় আপাতত তার মুক্তি হচ্ছে না।”

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই বিপুল জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন বলেও অভিযোগি আছে। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।


মাদক মামলাতেও সম্রাটের জামিন, রইল বাকি এক
 

দুই মামলায় সম্রাটের জামিন  

অবৈধ সম্পদ: সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছাল  

তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন এবং বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর গত ২২ মার্চ অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য মামলাটি ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে চলে যান ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।

এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। 

রমনা থানার অস্ত্র মামলায় ওই বছর ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক।

আর অর্থ পাচারের মামলা হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। গত ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাট ও সহযোগী আরমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে র‍্যাব।

এর মধ্যে গেল ১০ মার্চ অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায় তিনি জামিন পান।পরদিনই জামিন পান মাদক মামলায়। এরপর তার মুক্তির জন্য অবৈধ সম্পদের মামলায় জামিনের প্রয়োজন ছিল বলে তার আইনজীবীর ভাষ্য।