বুধবার রাজধানীর রেলভবনে ঈদের আগাম টিকেট বিক্রি ও সার্বিক
ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী নুরুল
ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, “৩ মে ঈদ হবে এটা ধরেই আমরা রেলের ঈদযাত্রার
পরিকল্পনা সাজিয়েছি। টিকেট বিক্রি করার ক্ষেত্রে কমলাপুরে সমস্ত যাত্রীর একটা
বিরাট ভিড় থাকে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য এবার রাজধানীর পাঁচটি কেন্দ্র থেকে টিকিট
বিক্রি করা হবে।”
>> কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চল ও
খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেনের টিকেট বিক্রি করা হবে
>> ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও
নোয়াখালীগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট মিলবে।
>> তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুর রুটের সকল
আন্তঃনগর ট্রেন এবং দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালের টিকেট বিক্রি হবে
>> ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ ও হাওর
এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট বিক্রি হবে
>> ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে
সিলেট ও কিশোরগঞ্জগমী সকল আন্তঃনগর ট্রেন টিকেট পাওয়া যাবে
রেলমন্ত্রী জানান, ইন্টারনেট ও অ্যাপের মাধ্যমে ঈদের অগ্রিম টিকেট
বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। কাউন্টারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকেট
বিক্রি চলবে।
ঈদের অগ্রিম টিকেট ফেরত নেওয়া হবে না। স্পেশাল ট্রেনের কোনো
টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে না, সেগুলো শুধুমাত্র স্টেশন কাউন্টারে হতে বিক্রি করা
হবে।
এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেনের
ব্যবস্থা রয়েছে রেলের। এর মধ্যে চাঁদপুর স্পেশাল-১ ও চাঁদপুর স্পেশাল-২ ট্রেন
দুটি চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে চলবে ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে এবং ঈদের পর ৪ মে থেকে ৮ মে
পর্যন্ত। এছাড়া ঢাকা দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল একই সময়ে চলাচল করবে।
ঢাকা-খুলনা রুটে খুলনায় স্পেশাল ট্রেনটি বাংলাদেশ-ভারতের
মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেসের অতিরিক্ত রেক দিয়ে চলাচল করবে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত।
এছাড়া ঈদের দিন ভৈরব বাজার ও কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়ায়
স্পেশাল-১ এবং ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়ায় স্পেশাল-২ চলাচল করবে বলে
জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঈদের আগের ৭ দিন, অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন
পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সাপ্তাহিক বিরতি থাকবে না। ঈদের পরে ডে অফ কার্যকর
করা হবে।
সাপ্তাহিক বিরতি না রাখায় অতিরিক্ত ৯২টি আন্তঃনগর ট্রেন বিশেষভাবে
পরিচালনা করতে পারবে রেলওয়ে। ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
ঈদের আগে ২৩ এপ্রিল বিক্রি হবে পাঁচ
দিন পরের,
অর্থাৎ
২৭ এপ্রিল
যাত্রার টিকেট। একইভাবে ২৪ এপ্রিল মিলবে
২৮ এপ্রিলের,
২৫ এপ্রিল
মিলবে ২৯
এপ্রিলের, ২৬ এপ্রিল মিলবে ৩০
এপ্রিলের এবং
২৭ এপ্রিল
১ মের
টিকেট। রোজা ৩০টি
হলে, অর্থাৎ ৩ মে ঈদ হলে
২৮ এপ্রিল
বিক্রি হবে
২ মের
ট্রেনের টিকেট।
ঈদের পর ফিরতি যাত্রা শুরু
হবে ৫
মে।
সেদিনের ট্রেনের
আগাম টিকেট
বিক্রি হবে
১ মে।
‘আর কিছু দিন
সবুর করুন’
ট্রেনর পঞ্চাশ শতাংশ টিকেট ‘সহজ’ অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করা
হচ্ছে, কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে টিকেট কিনতে সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। সেখান থেকে
উত্তরণের জন্য সময় চেয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
টিকেট কিনতে ভোগান্তির বিষয়টি তুলে ধরে এক সাংবাদিক সংবাদ
সম্মেলনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, সহজে টিকেট কেনা সহজ হয়ে থাকলে পাঁচ দিন পরের একটি
টিকেট ‘কিনে দেখান’।
উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “২০০৭ সাল থেকে আমরা একটি কোম্পানির
মাধ্যমে অনলাইনে টিকেট বিক্রি করে আসছি। নানা মামলা করে তারা দীর্ঘদিন টিকে ছিল। অনলাইনে
টিকেট কেনায় যাত্রীরা নানা বিরম্বনায় পড়েছে বলেই আমরা আউট সর্সিংয়ের মাধ্যমে
দিয়েছি। এই নতুন টেন্ডার নেওয়া কোম্পানি সহজ মাত্র দুমাস ধরে কাজ করছে। এত বছর সহ্য করতে পেরেছেন, আর কিছু
দিন সহ্য করেন।”
অনলাইনে পঞ্চাশ শতাংশ টিকেট বিক্রির কথা থাকলেও এখনই অনলাইনে
টিকেট ‘নেই’ বলা হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “ঈদটা
যাক, তার পরে মূল্যায়ন কইরেন। ঈদের পরে আমাকে ধরবেন। তখন বলতে পারব, তারা কোথায় কী
করেছে।”