অর্থনৈতিক সংকটে খাবি খাওয়া শ্রীলংকার হাজার হাজার লোক সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন, ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ও দীর্ঘ লোডশেডিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
বিক্ষোভকারীদের ভাষ্য, তাদের এখনকার দুর্ভোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, যার জন্য দায়ী রাজাপাকসে পরিবার। প্রেসিডেন্টের গোটাবায়া রাজাপাকসের বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে এখন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন; বলেছেন, পরিস্থিতির উন্নতির ক্ষেত্রে বিক্ষোভ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। মাহিন্দার কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে এও বলা হয়েছে যে, “প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত।”
“দেশ যে সমস্ত চ্যালেঞ্জের মুখে আছে, সেগুলো সমাধানে বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত থাকলে প্রধানমন্ত্রীও তাদের প্রতিনিধিদেরকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত,” বলা হয় বিবৃতিতে।
শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের কার্যালয়ের কাছেই ঘাসে পরিপূর্ণ একখণ্ড জমিতে দুই ডজনের মতো তাঁবুর ছোট কিন্তু ক্রমর্ধমান একটি শিবিরইদেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
এ বিক্ষোভস্থল এমন একটি জায়গায় পরিণত হচ্ছে যেখানে শ্রীলঙ্কার সবাই একত্রিত হতে পারছে, দেখা যাচ্ছে ঐক্যের বিরল প্রদর্শনী। ছোট কয়েকটি তাঁবুর এই শিবিরের বিক্ষোভকারীরা এ সপ্তাহে বলেছেন, রাজাপাকসেরা পদত্যাগ করলেই কেবল তারা বাড়ি ফিরবেন।
কয়েকমাসের বিলম্বের পর আগামী সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে এক ঋণ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে শ্রীলংকার।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান বলেছেন, তারা বিদেশি ঋণ দেওয়া বন্ধ করছেন। জেপি মরগানের বিশ্লেষকরাও দেশটির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে গুরুতর ঝুঁকি হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
এর ওপর অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়েছে শ্রীলংকার প্রধান বিরোধীদলীয় এসজেবি জোট। তারা প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে। অন্যথায়, তাদের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলে হুমকি দিয়েছে।
এসজেবি’র ন্যাশনাল অরগানাইজার এরান বিক্রমারত্নে বলেছেন, “আইএমএফ এর সঙ্গে ঋণ নিয়ে আলোচনার পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এই সরকারের ওপর জনগণের কোনও আস্থা নেই। প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতেই হবে।”