ক্যাটাগরি

হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায়ের অপেক্ষা, আদালতে কড়া নিরাপত্তা

বুধবার সকাল থেকেই আদালত এলাকায় পুলিশের অবস্থান বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি রিজার্ভ পুলিশও রয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুবুর রহমান।

আদালতের পেশকার সাইদুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে বেলা ১২টার দিকে। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুন রায় ঘোষণা করবেন।

কারাগারে থাকা দুই আসামি নিষিদ্ধ জঙ্গি দল জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) মিজানুর রহমান মিনহাজ ওরফে শফিক ওরফে শাওন এবং আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহীদকে সকাল ৮টার আগেই আদালতে নিয়ে আসা হয়।

তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে বলে জানান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও প্রসিকিউশন) হাজিজুর রহমান।

গত ২৭ মার্চ দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুন এ মামলার রায়ের জন্য ১৩ এপ্রিল নির্ধারণ করেছিলেন।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির রাতে বাংলা একাডেমির উল্টো পাশের ফুটপাতে হামলার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হুমায়ুন আজাদ, যিনি তার লেখার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির হুমকি পেয়ে আসছিলেন। একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করা হয়।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ওই হামলার ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা। ইসলামি জঙ্গিরা হুমায়ুন আজাদের ওপর ওই হামলা চালিয়েছিল বলে পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে।

এদিকে কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ২০০৪ সালের অগাস্টে গবেষণার জন্য জার্মানিতে যান এই লেখক। ওই বছর ১২ অগাস্ট মিউনিখে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার পরদিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মৃত্যুর পর আদালতের আদেশে অধিকতর তদন্তের পর সেই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।


১৮ বছর পর রায় দিয়ে কী হবে, হতাশা হুমায়ুন আজাদের পরিবারের

সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটি তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

এরা হলেন, মো. মিজানুর রহমান মিনহাজ ওরফে শফিক ওরফে শাওন ওরফে হামিম ওরফে হাসিম, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহীদ, নূর মোহাম্মদ শামীম ওরফে জে এম মবিন ওরফে সাবু, সালেহীন ওরফে সালাউদ্দিন ওরফে সজীব ওরফে তাওহিদ এবং হাফিজ মাহমুদ ওরফে রাকিব ওরফে রাসেল।

লেখক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় ঘিরে বুধবার ঢাকার আদালত পাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিল আদালত।

সালাহউদ্দিন সালেহীন ও হাফিজ মাহমুদ গ্রেপ্তার হলেও ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা। সালেহীন পালিয়ে যেতে পারলেও হাফিজ মাহমুদ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ওয়াজে বিষোদগার করা যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে প্রথমে এ মামলার আসামি করা হলেও পরে তার নাম বাদ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী বিপুল দেবনাথ জানান, এ মামলায় মিনহাজ ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাক্ষ্য দেন ৪১ জন।