বাজারে অনেক নামিদামি প্রসাধনী পাওয়া যায় চুলের যত্নের জন্য। তবে সামান্য চাল ধোয়া পানি দিয়েই যদি চুলের যত্ন নেওয়া যায় তবে ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য মনে হতেই পারে।
প্রাচীনকালে এটাই ছিল জাপানিদের চুল ধোয়ার উপকরণ, মানে এই চাল ভেজানো পানি। চীনের ‘ইয়াও কমিউনিটি’তেও এই পদ্ধতির প্রচলন ছিল।
উপকারিতা
ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ফাংশনাল ডার্মাটোলজিস্ট’ ও কেশ বিশেষজ্ঞ ডা. নেদা মেহের ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “চাল ভেজানো পানি চুলের জন্য আসলেই উপকারী। ‘স্টার্চ’-জাতীয় এই তরলে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি ও ভিটামিন ই মেলে। ফলে এই পানি চুলে প্রয়োগ করলে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকে, গোড়া শক্তিশালী এবং মসৃণ হয়।”
চুল গজাতে সহায়ক
ডা. মেহের বলেন, “চাল ভেজানো পানিতে একটি খনিজ তৈরি হয় যার নাম ‘ইনোসিটল’। এটি শরীরে ‘ডিএইচটি’য়ের মাত্রা কমায়। এই হরমোন চুল পড়ে যাওয়ার জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে ‘ডিএইচটি’ কমানো মাধ্যমে পরোক্ষভাবে চুল পড়া কমায় এবং নতুন চুল গজানো ভূমিকা রাখে চাল ধোয়া পানি।
সুইডেন’য়ের ‘সাশাহোয়ান’ স্যালন’য়ের ‘হেয়ার-স্টাইলিস্ট’ ট্রে গিলিয়ান বলেন, “একটি ব্যাপার নিশ্চিত যে ‘ইনোসিটল’ খনিজটি ‘হেয়ার ফলিকল’ ভেদ করে প্রবেশ করতে পারে এবং ক্ষয়পূরণ করে।”
অর্থাৎ চুল বড় করা বা নতুন চুল গজাতে এর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, চাল ধোয়া পানি যে চুল শক্ত করতে পারে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তৈরি পদ্ধতি
গিলিয়ান বলেন, ‘পানিতে কোন পদের চাল ভেজানো আছে তা নিয়ে মাথাব্যথার প্রয়োজন নেই। যেকোনো লাল কিংবা সাদা চালেই কাজ হবে।”
প্রথমে একবার চালগুলো ধুয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার প্রতি কাপ চালের জন্য দেড় কাপ পানি নিতে হবে।
ধীরে ধীরে নাড়তে হবে যতক্ষণ না পানিটা ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। এবার পানিটুকু ছেঁকে আলাদা করতে হবে।
বায়ুরোধক পাত্রে ওই পানি আট থেকে ১০ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে কক্ষ তাপমাত্রায়।
এই বায়ুরোধক পাত্রে রেখে দেওয়াটাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এভাবে ‘ফার্মেন্টেশন’য়ের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসে সকল পুষ্টি উপাদান।
ব্যবহারের উপায়
চাল ধোয়া পানি দেওয়ার আগে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
পরিষ্কার চুলে এই দ্রবণ ভালো কাজ করে। স্প্রে বোতলে করে ওই চাল ধোয়া পানি চুলে ছিটিয়ে দিতে হবে। ২০ মিনিট ওই পানিতে চুল ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে আবার চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুন