ক্যাটাগরি

ছাত্রীর অভিযোগে ঢাবি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তার নামে বরাদ্দ কক্ষটিও বাতিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগকারীর সম্মতি সাপেক্ষে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

গত ২৯ মার্চ অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় অভিযোগ উত্থাপন করার পর বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিশ্বজিৎ ঘোষসহ ১৮ জন শিক্ষক ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৭ জনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কমিটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় বলে সভায় উপস্থিত একাধিক শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ যৌন নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’।

বাংলা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক এ বিষয়ে মুখ না খুললেও বিভাগের একাধিক শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, গত মার্চ মাসে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন বিভাগের এক ছাত্রী।

পরে ২৯ মার্চ অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় ওই অভিযোগ পড়ে শোনান অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। সভার কার্যবিবরণী দেখার সুযোগ হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সেখানে বলা হয়, বিশ্বজিৎ ঘোষ ওই ঘটনায় তার ‘ভুল হয়েছে বলে’ স্বীকার করেন। তিনি সবার কাছে ‘ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষা’ করেন।

“কিন্তু অ্যাকাডেমিক কমিটির সদস্যরা তার দ্বারা সংঘটিত অতীতের বিভিন্ন যৌন নির্যাতনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রার্থনা গ্রহণ করেননি। তিনি (বিশ্বজিৎ ঘোষ) নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও সভার কাছে তা সত্য বলে মনে হয়নি। বরং তার ক্ষমা প্রার্থনা ও করুণা ভিক্ষার ঘটনায় তার অপরাধ স্বীকারের বিষয়টিও প্রমাণিত হয়।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার সাফল্য এবং সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর মাধ্যমে কোনো মহল এ কাজ করিয়েছে বলে আমি মনে করি। আমি মনে করি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন শিক্ষক হওয়ার কারণে হয়ত কোনো মহল আমার বিরুদ্ধে এ কাজ করিয়েছে। আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সত্য প্রকাশের আহ্বান জানাই।”

বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি নিজের বিভাগে ফিরে আসেন।

বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তিনি ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষায় প্রত্যক্ষণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, এমফিল-পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধায়ন, পরীক্ষা কমিটির কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

এছাড়া ভবিষ্যতে তাকে কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত না করা এবং সিঅ্যান্ডডি ও অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় তাকে না ডাকারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।