এই আসামির নাম মুফতি
শফিকুর রহমান। তিনি ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায়ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত।
বাংলা বর্ষবরণের দিন বৃহস্পতিবার
শফিকুরকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় র্যাব।
সন্ধ্যায় র্যাবের আইন
ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক এসএমএসে বলা হয়, “বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে
ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ২১শে আগস্ট
গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমানকে
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।”
২০০১ সালে রাজধানীর
রমনার বটমূলে ছায়ানটের বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। তাতে ১০
জন নিহত হয়।
বাংলাদেশের
অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলে আঘাত হানতে মৌলবাদী গোষ্ঠী সেই হামলা চালিয়েছিল বলে পরে
তদন্তে বেরিয়ে আসে।
হামলার
পর ওই দিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক
আইনে দুটি মামলা করেন।
দুই
মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ
১৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়।
ঘটনার
প্রায় আট বছর পর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকার আদালতে
অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
হত্যা
মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দায়রা জজ রুহুল আমিন প্রধান আসামি মুফতি হান্নানসহ
আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডের
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে মুফতি হান্নানের সঙ্গে শফিকুর ছিলেন। অন্যরা হলেন- আকবর হোসেন,
আরিফ হাসান সুমন, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা মো. তাজউদ্দিন,
হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার ও আবদুল হাই।
দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে তাজউদ্দিন, বদর, হাফেজ
জাহাঙ্গীর, শফিকুর ও আব্দুল হাই পলাতক ছিলেন। তার মধ্যে শফিকুর এখন ধরা পড়লেন।
সাবেক ব্রিটিশ
হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে
মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
রমনায় হামলার তিন বছর
পর ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট পল্টনে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। তাতে ২৪ জন
নিহত এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়।
সেই মামলায় ২০১৮ সালের
১০ অক্টোবর ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯
জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
রায়ে বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, খালেদার রাজনৈতিক সচিব হারিছ
চৌধুরীসহ যে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়, তার মধ্যে এখন ধরা পড়া শফিকুরও একজন।