ক্যাটাগরি

সুপ্রিম কোর্টের ‘অসাধু’ কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করলেন প্রধান বিচারপতি

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
নিয়ে এক সচেতনতামূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
অদম্য উৎসাহ নিয়ে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কতিপয় বেঞ্চ অফিসার, বেঞ্চ রিডার
এবং বিভিন্ন সেকশনের সুপারসহ অসাধু কিছু কর্মকর্তার জন্য তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ
হয়ে যাচ্ছে।

“একজন সেকশন সুপার বা একজন বেঞ্চ অফিসারের জন্য পুরো বেঞ্চের
বদনাম হয়ে যায়। এটা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।”

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি দ্ব্যর্থহীন
কণ্ঠে বলে দিতে চাই, এই পবিত্র আদালত দেশের মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। এখানে কোনো প্রকার
দুর্নীতি-অনিয়মের ন্যূনতম উপস্থিতি বরদাশত করব না। এখানকার অনিয়ম-দুর্নীতি নির্মূল
করতে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে কুণ্ঠাবোধ করব না। অনিয়ম বা দুর্নীতি দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করে আদালতের কেউ সুযোগ নেওয়ার
চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি কমিটি নজরদারি চালাচ্ছে বলেও জানান
প্রধান বিচারপতি।

“আমি এরই মধ্যে একজন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, ডেপুটি রেজিস্ট্রারের
মাধ্যমে কমিটি করে দিয়েছি। তাদের খেয়াল রাখতে বলেছি কোথাও কোনো অনিয়ম বা সাধারণ মানুষকে
কেউ হয়রানি করছে কি না।”

সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে বদলি বা পদায়ন মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে
হবে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “অযোগ্য ও চাটুকারদের মাধ্যমে সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব
নয়। বরং এরা নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলের চেষ্টায় থাকে। তারা কর্মঘণ্টা নষ্ট করে। যারা
সঠিক ও সৎভাবে কাজ সম্পন্ন করবেন তাদের প্রত্যেকের পেছনে শুধু আমি নই, প্রত্যেক বিচারপতি
থাকবেন।”

বিচারপ্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার না করে তাদের বিষয়টি
খেয়াল রাখতে আইনজীবীদের প্রতিও আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

“অধিকাংশ আইনজীবীই ভালো। কিন্তু কিছু আইনজীবী আছেন, যারা
মক্কেলদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। যে লোকটা এত আশা-ভরসা নিয়ে এল সে কিন্তু প্রথমেই
একটা ধাক্কা খায়। তারপর সে যখন আদালত চত্বরে আসে, এই খরচ, সেই খরচ; কোন খরচ সেটা আমরা
কমবেশি সবাই জানি। আস্তে আস্তে এই লোকগুলো নিঃস্ব হয়ে যায়।”

সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রতারক, অসাধু সিন্ডিকেট উচ্ছেদে আইনজীবীদের
সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

সুপ্রিম কোর্টে সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের মানোন্নয়নের
লক্ষ্যে বেঞ্চ অফিসার, বেঞ্চ রিডার ও সেকশন সুপারদের নিয়ে সচেতনতামূলক এই কর্মশালার
আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি
জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল
হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ বক্তব্য দেন।