ঘটনার রাতেই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুজনকে প্রত্যাহার করা হয় বলে শুক্রবার বিকালে জানিয়েছেন জেলা ডিবি পুলিশের ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়া।
বরখাস্ত হওয়া দুজন হলেন- নজরুল ইসলাম ও রোমান হাবিব রবিন।
দুই কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।
এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, পুলিশ সুপার কার্যালয় লাগোয়া ‘কুমিল্লার নগর উদ্যানে’ বসে গল্প করছিল কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের সামনে গিয়ে পরিচয় জানতে চান ডিবির এক সদস্য।
তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। এ সময় কিশোরীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করে মাস্ক খোলার জন্য বলেন। তিনি কিশোরকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাতনা ছিড়ালামু একবারে।’
এ ছাড়া ডিবির সদস্যরা মেয়েটির কাছে তার বাবার ফোন নম্বর চায়। তখন কিশোর-কিশোরী ভয়ে তাদের কাছে মাফ চাইতে থাকে। কিশোরটি জানায়, মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন।
তখন পাশ থেকে আরেক ডিবি সদস্য বলতে থাকেন, “বিদেশ থেকে (কিশোরীর বাবা) বাবা আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাইব।”
জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। এটি নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর রাতেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।“
এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ সুপার জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ যেকোনো কিছুর ভিডিও ধারণ করতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই দালিলিক প্রমাণ হিসেবে।”
“কিন্তু নগর উদ্যানের কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে যে কথাবার্তাগুলো শুনেছি, তা কাম্য নয়। তাদের ধারণ করা এ ভিডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল তাও খতিয়ে দেখা দরকার। ভিডিওটি ছড়িয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ করা হয়েছে।”