চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্বাক্ষর করা পত্র অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির আগের কমিটি বাতিল করে ৩৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়।
আহ্বায়ক আব্দুন নূর বারভূইয়া এবং সদস্য-সচিব আসেফ বারি টুটুলের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ইতিমধ্যে ১৯ জুন সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করে বিস্তারিত কার্যক্রম শুরু করেছে।
কিন্তু বিলুপ্ত কমিটির শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ এখনো আগের পদ-পদবী ব্যবহার করে নানা অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন বলে নতুন আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১২ এপ্রিল ইফতার আয়োজনের জন্য জাতীয় পার্টির ব্যানার লাগিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্স বরোর এস্টোরিয়া এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের বেইসমেন্টে বসেছিলেন বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি আবু তালেব চৌধুরী চান্দুসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
কিন্তু জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটি থাকা নেতা-কর্মীরা এ সংবাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যানার খুলে ফেলেন।
বাধাদানকারীদের মধ্যে ছিলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুর রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেন্দ্র যে কমিটি বিলুপ্ত করেছে সে কথা নাকি বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান জানেন না! এ সময় বাক-বিতন্ডা শুরু হলে কে বা কারা পুলিশ ডাকে। পুলিশ আসার আগেই খুলে নেয়া ব্যানার রেখে প্রতিবাদকারিরা চলে যান।”
কেন্দ্র অনুমোদিত যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সদস্যরা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন।
তিনি আরও বলেন, “পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, কেন্দ্র থেকে যথারীতি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের চিঠি বিদায়ী কমিটির কর্মকর্তাদেরকেও দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটির প্রক্রিয়ায় তারা পদ-পদবি না পাবার শংকা থেকেই সাংগঠনিক রীতির তোয়াক্কা করছেন না।”
এ প্রসঙ্গে আহ্বায়ক আব্দুন নূর বারভূইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করা পত্রের কপি নিজ হাতে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে দিয়েছি।”
ইফতার অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার দুইদিন পর ১৪ এপ্রিল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আবু তালেব চৌধুরী উল্লেখ করেন, “জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে যখন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের রূহের মাগফেরাত ও বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের মহোদয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং আগামী দিনে জাতীয় পার্টি যেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে পারে সে জন্য দোয়া চলছিল, সেই মুহূর্তে কিছুসংখ্যক সন্ত্রাসী ইফতার মাহফিলে প্রবেশ করে প্রয়াত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সাহেবের ছবি সম্বলিত ব্যানার টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে।”
“একজন এরশাদ সৈনিক, একজন এরশাদ প্রিয় কোন ব্যক্তি এরশাদ সাহেবের ছবি ছিড়ে ফেলতে পারে না। সেই সন্ত্রাসীগণ জাতীয় পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে নেতা হিসাবে নিজেকে জাহির করে এবং জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্র শাখা ভাঙ্গার জন্য বহুদিন ধরে তারা লিপ্ত আছে, তারই একটি প্রমান এই ইফতার ও দোয়া মিলাদ মাহফিলে হামলা।”
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইফতারে বাধাদানক্ররীদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পার্টি থেকে বহিষ্কারের অনুরোধ জানানো হয়।
বাধা দেওয়ার পরে ব্যানার ছাড়াই অনুষ্ঠিত ১২ এপ্রিলের ওই ইফতার আয়োজনে আরও ছিলেন- বিলুপ্ত কমিটির জাপার উপদেষ্টা সৈয়দ শওকত আলী, মোহাম্মদ আলী, জাপার সহ-সভাপতি আইনজীবী হারিস উদ্দিন আহমেদ, ডাঃ সেলিম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ জি.এম. ইলিয়াছ, যুগ্ন-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জাকির, যুব দপ্তর আব্দুল মোতালেব, নিউইয়র্ক সিটি কমিটির সভাপতি শুভংকর গাঙ্গুলী, নিউইর্য়ক ষ্টেট কমিটির সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ হানিফ, বলাকার সাবেক সভাপতি আজহারুল হক খোকা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ নাজিম, সবিতা দাস, মাইনুল হক।
ইফতার মাহফিলে দোয়া ও মিলাদ পরিচালনা করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হাণিফ। এ
প্রেস বিজ্ঞপ্তির সাথে জাতীয় পার্টির ইফতারের যে ছবি দেওয়া হয়েছে সেখানকার অনেক মানুষই নিজ উদ্যোগে ওই রেস্টুরেন্টে ইফতার করছিলেন।
তারা জাতীয় পার্টির সমর্থক নন বলে কয়েকজন জানিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউ ইয়র্ক সংবাদদাতাকে।
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |