ইফতারের কয়েক ঘণ্টা আগে প্রকাশ্যে এ হত্যাকাণ্ডের আট দিনের মাথায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব এ কথা জানায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন-মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ, তার ভাই মোহাম্মদুল হক ওরফে মাহমুদুল হক (৫২), আবদুল্লাহ (৩০), আব্দুল আজিজ (২৮) ও নুরুল হক (৫৩)। এরা সবাই কক্সবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা।
শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় ‘আত্মগোপনে’ থাকা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার।
গত ৭ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সদর থানার চেরাংঘর এলাকায় তরকারির দোকানের সামনে দা, ছুরি, হাতুড়ি, কিরিচ, লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মোরশেদ আলীর (৪০) ওপর হামলা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিন মোরশেদের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ২৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের পানিসেচ প্রকল্প নিয়ে মোরশেদ এবং মোহাম্মদের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
“মোরশেদের পরিবারের সদস্যরা পিএমখালী ইউনিয়নের পানিসেচ প্রকল্প পরিচালনা করে আসছিল। হত্যার সাথে যুক্তরা ওই প্রকল্পটি জোরপূর্বক নিয়ে চাষিদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করত।
“এর প্রতিবাদ করতেন প্রবাস থেকে দেশে ফেরা মোরশেদ। এসব নিয়ে মোরশেদের পরিবারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদুলদের সমস্যা ছিল। তারা ওই প্রকল্প ফিরে পাবার চেষ্টা করলে মাহমুদুলরা হুমকি দিয়ে আসছিল।”
র্যাব জানায়, পানিসেচ প্রকল্পের পরিচালনা নিয়ে ‘প্রতিবাদী যুবক’ মোরশেদ আলী তাদের ‘পথের কাঁটা’ ছিল। সে কারণে পরিকল্পিতভাবে মাহমুদুল হকের পরিবার তাকে হত্যা করে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আবছার বলেন, “মোরশেদ ইফতার কেনার জন্য ওইদিন বিকালে বাজারে গিয়েছিল। এসময় জনসম্মখে ধারালো কিরিচ দিয়ে তার ওপর হামলা করে।
“পরে লাঠি ও লোহার রড নিয়ে নানা স্থানে জখম করে। বাজারের লোকজন তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসতে চাইলে হত্যাকারীরা বেশ কয়েখ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যায়।”
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “হামলার সময় রোজাদার মোরশেদ ইফতার পর্যন্ত তাকে বাঁচিয়ে রাখার আকুতি জানালেও হত্যাকারীরা তাকে সে সুযোগ দেয়নি।”
গ্রেপ্তার মাহমুদুল হক এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম ‘পরিকল্পনাকারী’ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় “সে তার পরিবারের প্রধান হয়ে সকলের সঙ্গে পরিকল্পনা করে এ ঘটনা ঘটায়।
গ্রেপ্তার অপর আসামি মোহাম্মদ আলী মাহমুদুলের ভাই, সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে এর সঙ্গে যুক্ত হন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব।