গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় ক্যাম্পাস থেকে শহরগামী শাটল ট্রেনে দুজন যুবক শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করলে কোনোক্রমে রক্ষা পায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর আমরা ওই ছাত্রীর সাথে যোগযোগ করি। এটি ভয়ংকর ঘটনা।
“এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে। শাটল ট্রেনে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে। শাটলের নিরাপত্তার বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।”
চবির কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ওই শিক্ষার্থী সুস্থ হলে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “নিজেদের শাটল ট্রেনে এরকম অবস্থা হবে আমি কখনই চিন্তাও করিনি। আর কেউ যেন এমন পরিস্থিতিতে না পড়ে। প্রয়োজনে শাটল ট্রেন বর্জন করব।“
তার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার শহরে ফিরতে ক্যাম্পাস থেকে সাড়ে ৫টার দিকে ট্রেনে উঠলেও তা ছাড়তে দেরি করে। শাটল ট্রেনের যে বগিতে আমি উঠি, সেখানে দুই যুবক বসে ছিলেন। বগিতে অন্য কেউ ছিল কি না সেটি আমি খেয়াল করিনি। শহরগামী শাটল ট্রেনের ওই বগিতে কোনো বাতি ছিল না।
“ট্রেনটি ফতেয়াবাদ এলাকা অতিক্রম করলে দুই যুবক এসে প্রথমে আমার মুখ চেপে ধরেন। পরে তারা ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তাদের সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়। এসময় আমার মুখে বেশ কয়েকটি আঁচড়ও লাগে।”
চবির শাটল ট্রেনে অন্যদের ওঠা নিষিদ্ধ
তিনি বলেন, একপর্যায়ে আমি কোনো রকমে মুখ থেকে তাদের হাত সরিয়ে চিৎকার করতে সক্ষম হই। তারপরই দুই যুবক চলন্ত ট্রেনের ওই বগি থেকে বেরিয়ে ছাদে উঠে অন্য বগিতে চলে যান।
“পরে ট্রেন থামলে অন্য বগি থেকে লোকজন এসে ঠোট ও মুখের রক্ত মুছতে সহায়তা করে। তাদের সাথে কথা বলে জানতে পারি তারা বহিরাগত।”
ওই দুই যুবকের পোশাক-আশাক ও কথা শুনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরও মনে হয়েছে, ওরা চবির শিক্ষার্থী নন।
“বগি অন্ধকার থাকায় দুই যুবকের চেহারা ভালোভাবে দেখতে পাইনি। অবস্থা যে কতটা ভয়ানক ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। মনে হয়েছে আমি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি। ভীত-সন্ত্রস্ত থাকায় বিষয়টি কাউকে বলা হয়নি, যোগ করেন তিনি।
বহিরাগতদের যাতায়াতের কারণে চবির শাটল ট্রেন শিক্ষার্থীদের কাছে হুমকিস্বরূপ হয়ে পড়েছে বলে অন্য শিক্ষার্থীদেরও অভিযোগ।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। এ ট্রেনে করে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তবে প্রায়ই সূচি ঠিকঠাক থাকে না।
এছাড়া ট্রেনের বগিগুলোতে পর্যাপ্ত লাইট না থাকার অভিযোগও রয়েছে শিক্ষার্থীদের।