ক্যাটাগরি

চিনির দাম আরও বেড়েছে, কমেছে পেঁয়াজ ও মুরগির

শুক্রবার রাজধানীর
রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, সেগুনবগিচা, মগবাজারসহ বেশ কিছু খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে
নিত্যপণ্যের দাম বাড়া কমার এমন চিত্র পাওয়া যায়।

বিক্রেতারা জানান,
চলমান রোজায় এবং ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা বেশি থাকায় চিনি, গুঁড়া দুধ ও আদার দাম বেড়েছে।
চাহিদার চেয়ে বাজারে যোগান কিছুটা কমে যাওয়াকেই দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ হিসেবে দেখছেন
তারা।

আর ঠিক উল্টো কারণে
পেঁয়াজ, রসুন, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

চিনির দাম গত কয়েক
মাস ধরেই চড়া। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম বাড়তে বাড়তে এখন গিয়ে ঠেকেছে
৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৭৬ থেকে ৮০ টাকা। তবে প্যাকেটজাত চিনির দর অপরিবর্তিত
রয়েছে; বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।

প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ
৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে অন্তত ২০ টাকা বেড়েছে।

রামপুরা বাজারের দোকানি
সাকিব মাহমুদ বলেন, “কয়েক দিন পর ঈদ, এজন্য কিছু জিনিসের চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে কোম্পানির
ডিলারের কাছে অনেক কিছু অর্ডার করেও পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়া যায় না। বরং তারা আগে যে
পরিমাণ ডিসকাউন্ট দিত তা আরও কমিয়ে দিয়েছে। এ জন্য দাম কিছুটা বেড়েছে, হয়তো ঈদের পর
কমেও যেতে পারে।”

এদিকে দেশি ও আমদানি
করা দুই ধরনের আদার দামই বেড়েছে। দেশি আদা ১০০ টাকা এবং আমদানি আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা
কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে দেশি আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং আমদানি আদা ১১০ থেকে
১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

পাইকারি শ্যামবাজারের
পেঁয়াজ, রসুন ও আদার আড়তদার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “নিয়মিত সরবরাহ থাকলেও এখন আদার চাহিদা
বেড়েছে, যে কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। হয়তো রোজা-ঈদের কারণে এ অবস্থা হয়েছে, এটা সাময়িক।”

অপর দিকে বাজারে নতুন
পেঁয়াজ ও রসুনের সরবরাহ প্রতিদিনই বাড়ছে। আর রোজার কারণে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিমের
চাহিদা কিছুটা কমেছে। এর প্রভাবে দাম নিম্নমুখী হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

দেশি ও আমদানি উভয়
পেঁয়াজ মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহ যা ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
রসুন দেশি ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের চেয়ে রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকার মত কমেছে বলে দোকানিরা জানান।


বাজার ঘুরে ‘পজিটিভ নিউজ’ চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী
 

মালিবাগ বাজারের দোকানি
মো. সোহেল বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে পেঁয়াজ-রসুনের আমদানি বেশ ভাল, যে কারণে পাইকারি
ও খুচরা পর্যায়ে দাম কমেছে।”

পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল
কুদ্দুস জানান, পেঁয়াজের পাইকারি দর ১৮ থেকে ১৯ টাকা এবং রসুন ভাল মানের দেশি ৪০ থেকে
৫০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির
কেজি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। গত সপ্তাহ যা ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। তবে গত সপ্তাহর মত অপরিবর্তিত
দামে সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা ও লেয়ার মুরগির কেজি ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

শান্তিনগর বাজারের
ভাই ভাই ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা ইমরান হোসেন বলেন, “অনেকে রোজার শুরুতে মাছ-মাংসসহ
পুরো মাসের বাজার-সদায় কিনে নিয়েছেন। যে কারণে এই সপ্তাহে তাদের আর কেনা লাগছে না।
পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ বেশ ভালো আছে।”

কাপ্তানবাজারের শাহিনুর
হেনস হাউজের মালিক ওমর ফারুক বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে খুচরা পর্যায়ে চাহিদা কিছুটা কমেছে
বলে মনে হচ্ছে। আবার খামার থেকেও সরবরাহ বেড়েছে।”

এদিকে রোজা শুরু হওয়ার
আগেই গরুর মাংস কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবারও এ দামে গরুর
মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়।

রোজার আগে ডিমের ডজন
১১৫ থেকে ১২০ টাকা থাকলেও এখন তা কমছে। খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দর ১০৫ টাকায়
নেমে এসেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান,
অন্যান্য সময়ের তুলনায় রোজায় দিনের বেলায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় এবং সামাজিক
অনুষ্ঠান কম হয় বলে ডিমের চাহিদা কমে যায়; এ কারণে দাম কমেছে।

কাঁচাবাজারে সবজির
মধ্যে লম্বা বেগুনের দাম কিছুটা কমলেও নতুন করে বেড়েছে শিম ও কাঁচামরিচের দাম। বেগুন
৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শিম ১০০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা
কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দক্ষিণ বনশ্রীর বাসিন্দা
মতিউর রহমান বলেন, “পেঁয়াজ-রসুনের দাম নিয়ন্ত্রণ আছে বলে বাজারে স্বস্তি ফিরেছে বলা
যায় না। কারণ আজকে কিছুটা কমেছে কালকে অকারণে দাম দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। দুই-একটা
জিনিসের দাম কিছুটা কমেছে, আবার কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।“

বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার
জন্য সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।