সম্প্রতি মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টুইটারকে ঘিরে একর পর এক নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সর্বশেষ চার হাজার তিনশ কোটি ডলারে টুইটার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে প্রযুক্তি বাজারে আলোড়ন তুলেছেন তিনি।
কিন্তু টুইটার আদৌ বদলদাবা করতে পারবেন কি না, সে প্রশ্নে মাস্ক নিজেই সন্দিহান। ভ্যাংকুভারে অনুষ্ঠিত ‘টেড২০২২ (TED2022)’ সম্মেলনে মাস্ক বলেছেন, “আমি নিশ্চিত নই যে সত্যিই এটা কিনতে পারব কি না।”
বিবিসি জানিয়েছে, মাস্কের প্রস্তাব কোম্পানির ওপর বাড়তি কোনো চাপ সৃষ্টি করছে না বলে টুইটার কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন এর সিইও পারাগ আগরাওয়াল।
মাস্ক বলেছেন, টুইটারের সকল বিক্রয়যোগ্য শেয়ার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হলে বিকল্প হিসেবে ‘প্ল্যান বি’ প্রস্তুত রেখেছেন তিনি। তবে সেই পরিকল্পনার বিস্তারিত জানাননি।
টুইটার আরও ‘উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ’ হওয়া প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় যে বাকস্বাধীনতার জন্য একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্ষেত্র থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
যুক্তরাষ্ট্রের বাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া নথিতে মাস্ক দাবি করেছেন, টুইটারের ‘অসাধারণ সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে’ তিনিই সঠিক ব্যক্তি। আর তার প্রস্তাব যদি গ্রহণ করা না হয়, তবে অংশীদার হিসেবে নিজের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবেন তিনি।
মাস্কের প্রস্তাব পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে টুইটার। মাস্কের ‘অপ্রত্যাশিত কিন্তু শর্তহীন’ প্রস্তাবটি কোম্পানির পরিচালকরা বিচার-বিবেচনা করে দেখবেন বলে জানিয়েছে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটি।
ইতোমধ্যে টুইটারের ৯.২ শতাংশ শেয়ার আছে মাস্কের হাতে, স্বল্প সময়ে জন্য কোম্পানির বৃহত্তম অংশীদারও ছিলেন তিনি।
মাস্ককে টুইটারের শীর্ষ অংশীদারের অবস্থান থেকে সরিয়েছে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ভ্যানগার্ড গ্রুপ। ৮ এপ্রিলে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, টুইটারের ১০.৩ শতাংশ শেয়ার কিনে তারাই এখন বৃহত্তম অংশীদার।
টুইটার কর্মীরা অন্ধকারে
প্রযুক্তি বাজারে মাস্কের কর্মকাণ্ড একের পর এ আলোচনার জন্ম দিলেও টুইটার কর্মীরা অন্ধকারে আছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, মাস্কের প্রস্তাব আলোচনার জন্য টুইটারের প্রধান নির্বাহী পারাগ আগরাওয়াল কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসলেও, সেই বৈঠক শেষে কর্মীরা আরও বিভ্রান্ত হয়েছেন।
বিবিসিকে এক টুইটার কর্মী বলেছেন, “টুইটারের মানুষ যতোটা জানে, আমিও ততোটাই জানি।”
শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদকে কেবল মাস্কের ক্রয় প্রস্তাব নিয়ে নয়, প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে তার সম্ভাব্য বিপরীত প্রতিক্রিয়া নিয়েও ভাবতে হচ্ছে।
টুইটার হাজার কোটি ডলারে কোম্পানি হলেও বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তির সঙ্গে শত্রুতা কোম্পানির ভবিষ্যতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে– সেই শঙ্কাও আছে।