বৃহস্পতিবার রাতে মহাদেবপুর উপজেলার শহরের লাইব্রেরি পট্টি ও কুশারসেন্টার পাড়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে তাদের নওগাঁ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এরা হলেন উপজেলা সদরের প্রয়াত কাজী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কিউএম সাঈদ টিটো (৫৫) ও কুশারসেন্টার পাড়ার কাজী ময়েন উদ্দিনের ছেলে কাজী সামছুজ্জোহা মিলন (৪৮)।
উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘হিজাব পরায়’ শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ ওঠে শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার [৭ এপ্রিল] বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন ব্যক্তি হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
পরে এ ঘটনা তদন্তে তদন্তে মহাদেবপুর ইউএনও তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে ‘হিজাব পরার কারণে’ ছাত্রীদের পেটানোর অভিযোগের প্রমাণ পায়নি।
মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল বাদী হয়ে থানায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, কিউএম সাঈদ টিটো, কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও জেলার পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহাদেবপুর থানার এসআই শামিনুল ইসলাম জানান, মামলার অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার কারা সম্ভব হয়নি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাক পরে না আসায় গত ৬ এপ্রিল দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল ছাত্রীদের ও শরীরচর্চার শিক্ষক বদিউল আলম ছাত্রদের শাসন [প্রহার] করেন।
ছাত্র-ছাত্রীকে শাসন করার ঘটনায় আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে ‘হিজাব পরার’ শাস্তি দিয়েছেন বলে ফেইসবুকে ছড়ানো হয়। পরদিন [৭ এপ্রিল] বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন লোক হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুরও করেছে।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিলন জানান, ঘটনাটি তদন্তে কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গত সোমবার রাতে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
“প্রতিবেদনে ‘হিজাব পরার জন্য নয়; শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস না পরায় পেটানো’র সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষজনকে উসকে দেওয়ারও প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি।”
আরও পড়ুন:
নওগাঁয় হিজাবের কারণে শিক্ষার্থীদের পেটানোর ‘প্রমাণ মেলেনি’
নওগাঁর স্কুলে ভাংচুরের ঘটনায় জিডি
‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার’ হচ্ছে, বললেন নওগাঁর শিক্ষক আমোদিনী