নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপসহ কয়েকটি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হতে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ দেওয়া লাগবে না।
সেই সঙ্গে প্রবাসীদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
‘দ্বৈত নাগরিক ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনকারী বিদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তকরণ প্রসঙ্গে’ নির্দেশনা উপজেলা/থানা নির্বাচন পর্যায়ের রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের বুধবার পাঠানো হয় ইসি থেকে।
ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক পরিপত্রের আলোকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশের নাগরিককে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ দাখিলের প্রয়োজন হবে না।
এছাড়া হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশের নাগরিককেও এমন সনদ নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
তবে বলা হয়, বিয়ে সূত্রে বাংলাদেশি নাগরিত্ব নেওয়া বিদেশিদের এ দেশে ভোটার হতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাগরিকত্ব সনদ দিতে হবে।
‘প্রবাসী দ্বৈত নাগরিকরা স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন’
ভোটার হতে প্রবাসীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে সচেতন থাকতে ইসি সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন।
মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে এবং তাঁরা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা শুরু হয়। এসময় ভোটার তালিকাভুক্ত নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
অন্তত ২০টি নাগরিক সেবা পেতে এনআইডি লাগছে ভোটারদের। কিন্তু প্রবাসীদের ভোটার তালিকাভূক্ত হতে নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগ আসে শুরু থেকেই।
এরইমধ্যে প্রবাসীদের ভোটার তালিকাভুক্ত করতে বিগত তিনটি কমিশনই নানা ধরনের নির্দেশনা দিয়েও এসেছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বৈতনাগরিকদের নাগরিক সনদ দেওয়ার কথা থাকলেও বিষয়টি এড়িয়ে অনেকে ভোটারও হয়ে যান। সেই সঙ্গে বিদেশে নাগরিকত্ব নেওয়া অনেক বাংলাদেশি নাগরিককের দেশে সম্পত্তিসহ নানা ধরনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত করারও বিধান রয়েছে। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে অনেকেই ভোটার হতে হয়রানিরও শিকার হয়ে থাকে।
ভোটার হওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনও ২০১৮ সালে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ার কথা বলেছিল।
কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আগের স্মারকটি বাতিল করল।