ক্রিপ্টো জগতের
সবচেয়ে বড় হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে দেখা হচ্ছে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের
ডিজিটাল মুদ্রা হাতিয়ে নেওয়ার এ ঘটনাকে।
ব্লকচেইন প্রযুক্তিনির্ভর
গেইম ‘অ্যাক্সি ইনিফিনিটি’র গেইমাররা হ্যাকিংয়ের শিকার হন মার্চ মাসে। গেইমাররা এ প্ল্যাটফর্মে
গেইম খেলে আর নিজের অ্যাভাটার বিনিময় করে ক্রিপ্টো মুদ্রা কামাই করতেন। সেই ক্রিপ্টোই
হ্যাকাররা হাতিয়ে নিয়েছে।
হ্যাকিংয়ের ওই
ঘটনার সঙ্গে হ্যাকারদের দল ‘ল্যাজারাস’-এর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের
কর্মকর্তারা। সাইবার নিরাপত্তা গবেষকদের বিশ্বাস, ‘ল্যাজারাস’ নিয়ন্ত্রণ করে উত্তর
কোরিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
বৃহস্পতিবারের
এক বিবৃতিতে এফবিআই বলেছে, “তদন্তের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে সক্ষম হয়েছি যে চুরির
জন্য উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হ্যাকারদের দল ল্যাজারাস এবং এপিটি৩৮ দায়ী।”
২০১৪ সালে ‘সনি
পিকচার্স’ হ্যাক করে প্রথমবারের মত আলোচনায় এসেছিল ল্যাজারাস। সেবার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির
গোপন নথিপত্র ফাঁস করে দিয়েছিল হ্যাকারদের দলটি। হ্যাকাররা দাবি করেছিল, সনির কমেডি
সিনেমা ‘দ্য ইন্টারভিউ’ মুক্তি দেওয়া চলবে না। সিনেমাটির মূল গল্প ছিল উত্তর কোরিয়ার
নেতা কিম জং-উনকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা নিয়ে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের
পক্ষ থেকে আগেই অভিযোগ উঠেছিল, পিয়ংইয়াং আন্তর্জাতিক অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে পারমাণবিক
অস্ত্র প্রকল্পের খরচ জোগানোর কৌশল হিসেবে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ চুরি করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের
ট্রেজারি বিভাগের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “ডিপিআরকে (ডেমোক্রেটিক পিপলস’ রিপাবলিক
অব কোরিয়া) যে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র
প্রকল্পের খরচ জোগাড়ের জন্য সাইবার অপরাধের মত বেআইনি কর্মকাণ্ডের ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল
হয়ে পড়ছে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবহিত আছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের
২০২০ সালের একটি সামরিক প্রতিবেদনে অনুযায়ী, অন্তত ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে চালু
আছে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং প্রকল্পগুলো। পরের কয়েক দশকে উত্তর কোরিয়ার সাইবার বাহিনী
‘ব্যুরো ১২১’-এর সদস্য সংখ্যা পৌঁছেছে ছয় হাজারে। বেলারুশ, চীন, ভারত, মালয়েশিয়া এবং
রাশিয়া থেকে হ্যাকিং কর্মকাণ্ড চালায় ব্যুরো ১২১-এর সদস্যরা।
উত্তর কোরিয়ার
হ্যাকাররা কেবল ২০২১ সালেই অন্তত সাতটি প্ল্যাটফর্মে সাইবার হামলা চালিয়ে প্রায় ৪০
কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টো মুদ্রা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্লকচেইন বিশ্লেষক
প্রতিষ্ঠান ‘চেইনঅ্যানালাইসিস’। বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের জন্য সবচেয়ে
সফল বছর ছিল ২০২১।