তারা দীর্ঘদিন ধরে নিন্ম-আয়ের বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের উচ্চবেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে আসছিলেন বলে র্যাবের ভাষ্য।
তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও দালাল চক্রের কাছে নারীদের বিক্রির তথ্য দিয়েছে র্যাব।
র্যাব ১৫-এর অতিরিক্ত অধিনায়ক মেজর শেখ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, শনিবার ভোরে খবর পেয়ে তারা কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনা এলাকায় অভিযান চালান। তখন সন্দেহজনক লোকজন ট্রলারসহ গভীর সাগরে পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া দিয়ে ট্রলারটি জব্দ করতে সক্ষম হন র্যাব সদস্যরা।

“ট্রলার থেকে ছয় মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়। তাদের কাছে পাওয়া গেছে তিনটি বন্দুক, চারটি গুলি, দুটি রামদা, একটি স্যাটেলাইট ফোন, একটি কম্পাস, একটি জিপিএস, পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের ফেলে যাওয়া ১৬টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিমকার্ড, একটি হাতঘড়ি ও এক হাজার ২০০ টাকা।”
আটককৃতরা হলেন জেলার মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সিপাহীপাড়ার গোলাম কুদ্দুসের ছেলে মো. শাহজাহান (৩৭), কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা পূর্বপাড়ার নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. পারভেজ (২৩), একই এলাকার আমির হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল মজিদ (২৭), ফজল করিমের ছেলে আমির মো. ফয়সাল (২৪), আমির হোসেনের ছেলে মো. শাকের (৩০) ও মো. মীর কাশেমের ছেলে মো. রফিক আলম (৩৫)।
র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাতে বলেন, “তারা সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত।

“চক্রের সদস্যরা নিন্ম-আয়ের মানুষ এবং মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের লোকজনকে মালয়েশিয়ায় উচ্চবেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে পাচার করে আসছিলেন। তারা তিন লাখ টাকার চুক্তিতে এ কাজ করছিলেন। টাকা গ্রহণের ক্ষেত্রে তারা অনলাইন ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং অবলম্বন করতেন।”
তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে পাচারের সময় নারীদের ধর্ষণ ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ।
তিনি আরও জানান, পাচারকারীরা নারীদের কাউকে কাউকে দালালদের কাছে বিক্রি করে দেন। আটক ছয়জন এ পর্যন্ত ৩৭ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারীকে মিয়ানমারে বিক্রি করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান মেজর শেখ মোহাম্মদ ইউসুফ।