পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় বালীগঞ্জের আসনে উপনির্বাচনে শনিবার প্রকাশিত ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাবুলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রভাবশালী নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে এই আসনে উপনির্বাচন হয়।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ভোটে জিতলেও সুব্রতের ধারে কাছে পৌঁছতে পারেননি বাবুল। তিনি ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন ১৯ হাজার ভোটে। যেখানে সুব্রত জিতেছিলেন ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে।
বালীগঞ্জ উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে লড়াইয়ে ফিরেছে বামফ্রন্ট। বিজেপিকে হটিয়ে এই আসনে দ্বিতীয় হয়েছেন সিপিএম প্রার্থী সায়রা হালিম। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার সাবেক স্পিকার হাশিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যেখানে গত নির্বাচনে লালদের ভোট ছিল ৫ শতাংশের ঘরে।
ভোটে জয়ের পর বাবুল সাংবাদিকদের বলেছেন, “এই জয় মা-মাটি-মানুষের তরফে তৃণমূলকে নববর্ষের উপহার।”
তবে ভোট কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝির দিকে বলিউডের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করা বাবুল টালিগঞ্জেও ছিলেন জনপ্রিয়।
২০১৪ সালে হঠাৎই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি, লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল আসনে জিতে চমকও দেখান।
তখন ভারতের এই রাজ্যটিতে বিজেপির ভিত ততটা মজবুত হয়নি। পরের বার বিজেপির সাফল্যের সঙ্গে বাবুল আবারও নির্বাচিত হন। এরপর নরেন্দ্র মোদী তার মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীও করেন বাবুলকে।
কিন্তু লোকসভার সদস্য হয়েও গত বছর রাজ্য বিধান সভার নির্বাচনে প্রার্থী হন বাবুল। তাতে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে ৫০ হাজার ভোটে হারের পর মন্ত্রিসভায় রদবদলে বাবুল বাদ পড়েন।
তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাবুল বিজেপি ছাড়েন, পদত্যাগ করেন লোকসভা থেকে। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি।
এদিকে আসানসোল আসনে লোকসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল বাবুলের মতোই বিজেপি ছেড়ে আসা বলিউডের আরেক তারকা শত্রুঘ্ন সিনহাকে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় সেই আসনে জিতেছিলেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৭ ভোটে।
উপনির্বাচনে সাধারণ ভাবে জয়ের ব্যবধান কমে। কিন্তু ‘বহিরাগত’ শত্রুঘ্ন এবার জিতেছেন প্রায় ৩ লাখেরও বেশি ভোটে। আর তার মধ্য দিয়ে এই প্রথম আসানসোলে জিতল মমতার দল।
জয়ের পর শত্রুঘ্ন বলেন, “এবার বিজেপি এখানে ইভিএমের খেলা দেখাতে পারেনি। স্বচ্ছ ভোট হয়েছে। ভয় বা পক্ষপাত কোনওটাই ছিল না। সেটা সবাই দেখেছে। তারই ফল মিলেছে।”
তবে শত্রুঘ্ন যেকথা বলেছেন, তার অর্থ দাঁড়ায় গত নির্বাচনে আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয়ের জয়ে খাদ ছিল।
পুরনো খবর