রাজধানীর রামপুরা-হাতিরঝিল
এলাকা থেকে শুক্রবার গভীররাতে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা
হলেন, কামরুল আহম্মেদ (৪২), খালেদ মাসুদ হেলাল (৩৬), তোফায়েল আহম্মেদ (৩৮) ও জামাল
(৪২)। তাদের কাছ থেকে ২৭টি পাসপোর্ট, জাল ভিসা ও ভুয়া টিকেট তৈরিতে ব্যবহৃত
কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গত ১২ এপ্রিল মৌলভীবাজারের এক নারী র্যাব-৩ কে ফোন করে জানায়- তাকে
বিদেশে পাঠানোর নামে প্রশিক্ষণের কথা বলে রামপুরার এক বাসায় এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ
করে।
ওই নারী মোবাইল ফোনে
সাহায্য চাইলে র্যাবের একটি দল বুধবার রাত পৌনে তিনটার দিকে রামপুরা এলাকায়
অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এরপর শুক্রবার রাতে বাসার
মূল ভাড়াটিয়া কামরুল ও ওই নারীকে ‘ধর্ষণকারী’ তোফায়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অপর
দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ওই নারীর বরাতে র্যাব
জানায়, বেশ কিছুদিন আগে ওই নারীর সঙ্গে সাইফুল নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। পরে যৌতুক
বাবদ পাঁচ লাখ টাকা কৌশলে আদায় করে সাইফুল পালিয়ে যায়।
“ওই নারীর বাবা ঋণ করে,
সুদের বিনিময়ে টাকা নিয়ে যৌতুক দেয় এবং পরে এই টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে পাওনাদারেরা।
এক পর্যায়ে তার বাবা স্থানীয় তোফায়েলের কাছে পরামর্শ নিতে গেলে তার মেয়েকে
মধ্যপ্রচ্যে গৃহকর্মী হিসাবে পাঠানোর জন্য প্রলোভন দেখায়। এই প্রলোভনে পড়ে মেয়েকে
দেশের বাইরে পাঠাতে রাজি হয়।”
বিদেশ যেতে হলে ভাষা
শিখতে হবে জানিয়ে তোফায়েল ওই নারীকে ঢাকায় মানবপাচারকারীর সদস্য কামরুলের বাসায়
নিয়ে ওঠে উল্লেখ করে র্যাব বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, সেখানেই তোফায়েল তাকে ধর্ষণ করে।
র্যাব জানায়, চক্রটি এরইমধ্য
শতাধিক ব্যাক্তিকে মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে পাঠিয়েছে। কেউ
বিমানবন্দর থেকে ফিরে আসে, কেউ সেসব দেশে গিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বা কারাগারে
আছে।
“ওই চক্র মধ্যপ্রাচ্য হয়ে
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বেকার যুবক
যুবতিদের কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে ভুয়া ভিসা এবং ভুয়া টিকেট
ধরিয়ে দেয়।”
এ পর্যন্ত চক্রটি গত
তিনবছরে আটবার বাসা পরিবর্তন করেছে এবং প্রায় ত্রিশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে
ধারণা র্যাবের।
নবমশ্রেণি পর্যন্ত পড়া
কামরুলকে হোতা উল্লেখ করে র্যাব জানায়, ২০১৯ সালে একবার ভ্রমণ ভিসায় দুবাই যান
তিনি। সেখানে একটি মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
“ঢাকায় এসে সৌদিতে ১৫ বছর
থেকে দেশে আসা খালেদের সাথে প্রতারণার ব্যবসার প্রসার ঘটায়। কামরুলের বিরুদ্ধে
একাধিক মামলা রয়েছে।”