বিদেশি
মুদ্রার রিজার্ভের চরম সংকটে দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা হয়েছে ভারত মহাসাগরের ছোট্ট এ দ্বীপরাষ্ট্রটি।
গত দুই বছরে তাদের রিজার্ভ ৭০ শতাংশের বেশি কমেছে, মার্চের শেষে এসে যা ১৯৩ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রির্জার্ভের এ সংকটের কারণে দেশটিতে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে; এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দ্বীপদেশটির বাসিন্দাদেরকে দিনে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা লোডশেডিংও সহ্য করতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা জানায়, তারা বিদেশি ঋণের কিছু কিস্তির পরিশোধ আপাতত স্থগিত রাখছে আর হাতে যে অল্প পরিমাণ ডলার রয়েছে তা তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কাজে লাগাতে চায়।
শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভকারীরা প্রতিদিনই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে তার কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইটে ধাপে ধাপে ৪২টি বিমান ইজারা নেওয়ার দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারী ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সকেও বিপদে ফেলেছে।
২০১৯-২০ সালেই তাদের ৪ হাজার ৪১৪ কোটি লঙ্কান রুপি লোকসান হয়েছে, আগের বছরও যার পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৭০ কোটি।
“এটা অবশ্যই কৌতুক। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া; জ্বালানি, গ্যাস বা ওষুধ নেই, এই ছাইপাঁশের (ইজার) টাকা কোথা থেকে আসবে?! দ্রুত ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত,” টুইটারে এমনটাই লিখেছেন শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধীদল সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) জোটের সাংসদ হার্ষা ডি সিলভা।
আরেক বিরোধীদল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্সের বিমান ইজারা নেওয়ার এ পরিকল্পনা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন; পরিকল্পনাটি নিয়ে অসংখ্য শ্রীলঙ্কানও অনলাইনে তাদের অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন।
“নতুন বিমান দিয়ে কী হবে, যখন আপনার কাছে সেটি ওড়ানোর মতো জ্বালানিই নেই,” বলেছেন টুইটার ব্যবহারকারী শিব থিয়াগামূর্তি।
তবে এয়ারলাইন্সটির চেয়ারম্যান অশোকা পাথিরাগে বলেছেন, এখন বহরে থাকা বিমানগুলোর মধ্যে পর্যায়ক্রমে যেগুলো অনুপযোগী হয়ে যাবে সেগুলোর বদলে প্রাথমিকভাবে নতুন ২১টি বিমান ইজারা নেওয়া তাদের ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের ব্যবসা পরিকল্পনারই অংশ।
“ইজারার অর্থ শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সই দেবে; আমরা সরকারের তহবিলের ওপর নির্ভর করবো না।
“এয়ারলাইন্স মুনাফা করছে। আমাদের ঋণ আছে, তা পরিশোধের জন্য আমাদের আয় করতে হবে,” বলেছেন তিনি।
তীব্র অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের ঋণ কর্মসূচি নিয়ে শ্রীলঙ্কার সরকার সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনাও শুরু করতে যাচ্ছে।