শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার
সেন্টারে বেসরকারি দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এমআরডিআই ও এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে
অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এ অভিমত উঠে আসে।
ব্যবসা বাণিজ্য সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
তৈরিতে ঢাকার গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের সমাপন উপলক্ষে
এ দিন ‘ব্যবসায় সাংবাদিকতার ভবিষ্যত এবং ব্যবসায় সাংবাদিকতায় নৈতিকতা ও শিষ্টাচার’
শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
দৈনিক প্রথম আলো’র হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, “এখন বাণিজ্য সাংবাদিকতার স্বর্ণ
সময়। সারাবিশ্বে মন্দা পরিস্থিতি চলছে, যার আঁচ পড়ছে বাংলাদেশেও। যুদ্ধ পরিস্থিতি,
সরকারি খরচ বেড়ে যাওয়া, ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার হার বেড়ে যাওয়া- এসব কিছু বাণিজ্য সংবাদের
চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
“বাণিজ্য সংবাদকে নির্দিষ্ট পাতায় সীমাবদ্ধ
রাখলে চলবে না। সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে সঠিকভাবে সংযুক্ত করে এর পাঠক শ্রেণি
বাড়াতে হবে। এমনভাবে সংবাদ তৈরি করতে হবে যেন সেটা প্রথম পাতায় স্থান দেওয়ার প্রয়োজন
পড়ে।”
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের কারণে
ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে প্রতিবেদনের সময়োপযোগিতা দিন দিন আরও বাড়তে থাকবে বলে মন্তব্য
করেন তিনি।
বিআইবিএম এর শিক্ষক আহসান হাবীব বলেন, “বাণিজ্য
সংবাদ দেখে আমরা প্রতিদিন অনেক কিছু শিখছি, এটা সত্য। আবার অনেক পত্রিকায় বাণিজ্য সংবাদের
মধ্যে তথ্যগত নানা ভুল দেখা যায়, সেটা মোটেও কাম্য নয়। বাণিজ্য সংবাদে সবসময় দুর্বল
শ্রেণির স্বার্থের প্রতিফলন থাকতে হবে।”
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সহযোগী সম্পাদক শামীম
জাহেদী মনে করেন, বিকল্প সামাজিক মাধ্যম ও অন্যান্য প্রযুক্তির কারণে দর্শক-শ্রোতারা
এখন প্রচলিত গণমাধ্যম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ভবিষ্যতে দর্শকপ্রিয়তা ধরে রাখতে নতুন
নতুন কর্মকৌশলের আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
দৈনিক সমকাল’র বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন
বলেন, “কয়েক দশক আগের তুলনায় এখন বিজনেস জার্নালিজমের ব্যাপ্তিটা বেড়েছে। আর্থিক দুর্নীতি
বেড়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতি একাকার হয়ে যাওয়াসহ অনেকগুলো নতুন
নতুন দৃষ্টিকোণ বিজনেস জার্নালিজমকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।”
দেশ উন্নত হলে ব্যবসা সাংবাদিকতার গুরুত্ব
বাড়বে মন্তব্য করে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সেরাজ বলেন,
“ব্যবসা বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত ও খবরের চাহিদাও বাড়বে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের
অর্থব্যবস্থাপনার দর্শনটা ঠিক করতে হবে।
“ভবিষ্যতে হয়তো আমাদেরকে পুঁজিবাদের কোনো
না কোনো একটা ভার্সন বেছে নিতে হবে। সেজন্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ও মুক্তবাজার ব্যবস্থাপনার
জনন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে “
ভালো গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতার
পক্ষে মত তুলে ধরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সেকেন্ড সেক্রেটারি জাস্টিন হালপার্ন বলেন,
“সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র অনলাইন কিংবা অফলাইনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে
থাকে।”
এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমানের
সঞ্চালনায় কর্মশালায় চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুনসহ বিভিন্ন
সংবাদ মাধ্যমের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অভিমত তুলে ধরেন।