রোববার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা এবং ‘সংবাদ শিরোনামে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন বিধায় তিনি শপথ নিতে পারেননি, তার নেতৃত্বেই গঠিত সরকার ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়ার মুজিবনগরে শপথ নিয়েছিল।
“বাংলাদেশের প্রথম সরকার এই মুজিবনগর সরকারের অধীনেই পুরো মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।”
বিএনপির মুজিবনগর দিবস পালন না করা প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করা মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আজকে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি মুজিবনগর দিবস পালন করে না। অথচ জিয়াউর রহমান এই মুজিবনগর সরকারের অধীনেই একজন চাকুরে ছিলেন এবং চারশ’ টাকা বেতন পেতেন।”
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাছান মাহমুদ বলেন, “জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন নাকি পাকিস্তানিদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন, সেটি নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন।”
মুজিবনগর দিবসে সাংবাদিকদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এদিন শপথ গ্রহণে যাবার জন্য মুজিবনগর সরকারের সদস্যরা এবং সংবাদ সংগ্রহের জন্য দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা সবাই মধ্যরাতে কলকাতা প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করেছিল।
“পরে সবাই কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে সমবেত হন, পরে সেই জায়গার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। যে সাংবাদিকরা সেদিনকার এই সংবাদ সারা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলো, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
‘সংবাদ শিরোনামে বঙ্গবন্ধু’ বই সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে সংবাদগুলো পরিবেশিত হয়েছিল, সেগুলো এই বইতে স্থান পেয়েছে। এমন তথ্য সম্বলিত দুর্লভ চিত্র এখানে আছে, যা দেখলে পুরো বইটি পড়তে ইচ্ছে হয়।
“তখনকার দৈনিক আজাদ, ইত্তেফাক, সংবাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা, পূর্বদেশ, পিপলস, মনিং স্টার, অবজারভার, বিদেশি পত্রিকার মধ্যে আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দু, ইভিনিং নিউজ, নিউ ইয়র্ক টাইমস, টাইমস, জাপান টাইমস, গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন পোস্টসহ নানা পত্রিকার অংশ বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে।”
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, প্রধান তথ্য অফিসার শাহেনুর মিয়া।