রোববার নওগাঁর মহাদেবপুর আমলী আদালত-৩ এর বিচারক মো. তাইজুল ইসলাম তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ নিয়ে এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনজন গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে গ্রেপ্তার হয়েছেন মহাদেবপুর উপজেলা সদরের মৃত কাজী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কিউএম সাঈদ টিটো ও কুশারসেন্টার পাড়ার কাজী ময়েন উদ্দিনের ছেলে কাজী সামছুজ্জোহা মিলন।
মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ সকালে আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন নাকচ করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়।
দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে ‘হিজাব পরায়’ শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ উঠলে গত বৃহস্পতিবার [৭ এপ্রিল] বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন ব্যক্তি হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
এ ঘটনা তদন্তে মহাদেবপুর ইউএনও তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে ‘হিজাব পরার কারণে’ ছাত্রীদের পেটানোর অভিযোগের প্রমাণ পায়নি।
এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আমোদিনী পাল বাদী হয়ে মহাবেদপুর থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, কিউএম সাঈদ টিটো, কাজী সামছুজ্জোহা মিলন, বিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও নওগাঁর পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গত সোমবার রাতে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হিজাব পরার জন্য নয়; শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস না পরায় পেটানো’র সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষজনকে উসকে দেওয়ারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:
নওগাঁয় হিজাব নিয়ে গুজবের দুই ‘হোতা’ গ্রেপ্তার
নওগাঁয় হিজাবের কারণে শিক্ষার্থীদের পেটানোর ‘প্রমাণ মেলেনি’
নওগাঁর স্কুলে ভাংচুরের ঘটনায় জিডি
‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার’ হচ্ছে, বললেন নওগাঁর শিক্ষক আমোদিনী