সাধারণভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা
হয় ভিটামিন ই দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে, কোষের ক্ষয় ও রক্ত জমাট বাঁধা
রোধে কাজে লাগে।
তবে এই ভিটামিন শরীরে আরও অনেক কাজ করে।
সাধারণত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক কোনো সমস্যা থেকে ভিটামিন ই’র অভাব হতে
পারে।
যেভাবেই হোক, এই ভিটামিনের অভাব বোঝার
রয়েছে বেশ কয়েকটি উপায়।
পেশির দুর্বলতা: “পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই না থাকলে পেশিতে দেখা দিতে পারে ‘অক্সিডেটিভ
স্ট্রেস’। ‘ফ্রি র্যাডিক্যাল’ ও ‘অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’য়ের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকলে
এরকম হয়”, বলেন ভার্জিনিয়াতে অবস্থিত ‘রিভারসাইড হেল্থ সিস্টেম’য়ের চিকিৎসক ক্রিস্টিন
এলিজাবেথ হল্টজ।
ইনসাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে
তিনি আরও বলেন, “অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ থেকে পেশিতে দুর্বলতা দেখা দেয়।”
নড়াচড়ায় সমস্যা: হাত-পা নাড়া, দেহ ঠিকমতো নড়াচড়া করার ক্ষেত্রে স্নায়ু ও মস্তিষ্কের মধ্যে
সম্পর্ক রয়েছে। ভিটামিন ই’র অভাবে মস্তিস্কের ‘পার্কিঞ্জি স্নায়ু’র ক্ষতিগ্রস্ত হতে
পারে। যা কিনা দেহের অন্যান্য স্নায়ু থেকে সংকেত গ্রহণ করে।
হল্টজ বলেন, “যখন এই স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত
হয় তখন নড়াচড়া, হাঁটা-চলাতেও সমস্যা হয়।”
দুর্বল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা: শুধু ভিটামিন সি নয়, ভিটামিন ই’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্ষয় রাখতে
‘টি সেল’ গঠনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হল্টজ বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দু্র্বল
হলে নানান রকম রোগে সহজেই আক্রান্ত হয় মানুষ। আর সেরে উঠতেও সময় নেয়।”
দৃষ্টি ক্ষমতায় প্রভাব: রেটিনা’র যে অংশ আলো গ্রহণ করে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভিটামিন
ই’র অভাবে। আর এরকম হলে ঝাপসা দেখতে পারে রোগী,
জানান হল্টজ।
অভাবে কারণ
খাদ্যাভ্যাসের কারণে ভিটামিন ই’র অভাব
খুব কমই হয়। সাধারণত বংশগত কারণ ও বিভিন্ন রোগের কারণে ভিটামিন ই’র স্বল্পতা তৈরি হতে
পারে।
“শরীর ঠিক মতো চর্বি হজম ও গ্রহণ করতে
না পারলে এরকম হতে পারে।” বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘বেথানি মেডিকেল ক্লিনিক’য়ের চিকিৎসক
ও প্রতিষ্ঠাতা শিরিন পিটার্স।
এই ভিটামিন হল চর্বিতে দ্রবণীয়। শরীর
যেভাবে চর্বি গ্রহণ করে ভিটামিন ই’ও সেভাবে গ্রহণ করে। তারপর চর্বির কোষ ও যকৃতে সংরক্ষিত
রাখে।
আর এই অবস্থা বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণে
হতে পারে।
সাধারণত সুস্থ মানুষের ভিটামিন ই’র অভাব
হয় না। তাই যদি কখনও নড়াচড়ায় সমস্যা, পেশির দুর্বলতা বা চোখে ঝপসা দেখা শুরু হয় তবে
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ভিটামিন ই’র প্রাকৃতিক উৎস
এক আউন্স সূর্যমুখীর বীজ থেকে মিলবে ৭.৪
মি.গ্রা.। এক আউন্স কাঠ-বাদাম থেকে পাওয়া যায় ৬.৮ মি.গ্রা.। দুই টেবিল-চামচ পিনাট বাটার
থেকে মিলবে ২.৯ মি.গ্রা.। এক আউন্স চিনাবাদামে থাকে ২.২ মি.গ্রা.। আধা কাপ পালংশাকে
পাওয়া যাবে ১.৯ মি.গ্রা. ও আধা কাপ ব্রকলি থেকে মিলবে ১.২ মি.গ্রা.।
আরও পড়ুন