ওই ঘটনার তদন্তে নেমে শনিবার
রাতে নরসিংদীর মাধবদী থেকে নতুন হেলপার মো. ইউসুফ ভুইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিআইডির
এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান।
২৫ বছর বয়সী ইউসুফ এক সময়
‘ভবঘুরে জীবনযাপন’ করতেন। প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে ইকোনো সার্ভিসের চালকের সহকারী
হিসাবে কাজ পেয়েছিলেন তিনি।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে
রোববার সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তা ধর বলেন, ইকোনো বাসের চালক নাহিদ
হোসেনের সঙ্গে কথা বলে ইউসুফকে কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন ওই প্রতিবেশী।
গত ৮ এপ্রিল বিকাল ৩টায় ঢাকার
মানিকনগরের কাউন্টার থেকে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়া ইকনো বাসে দায়িত্বে ছিলেন
সুপারভাইজার লিটন, ইউসুফ এবং পুরনো আরেক হেলপার শিপন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় যাত্রীদের
নামিয়ে দিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গাড়িটি রাখা হয়।
মুক্তা ধর বলেন, “পুরনো হেল্পার
শিপনের দুই দিনের ছুটিতে যাওয়ার কথা থাকায় ৯ এপ্রিল ভোর থেকে চালকের সহকারী হিসেবে
নতুন নিয়োগ পাওয়া ইউসুফ গাড়িটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে থাকেন। চালক নাহিদ, সুপারভাইজার
লিটন ও সহকারী শিপন তাদের সারা দিনের প্রাপ্য মজুরি ভাগ করে নেওয়ার পর নাহিদ ও শিপন
বাড়ি চলে যায়।
“এরপর রাত আনুমানিক ১টায়
ইউসুফ সুপারভাইজার লিটনের কাছে তার পারিশ্রমিক চাইলে লিটন জানায় যে, তার ডিউটি এখনও
শুরু হয়নি। ৯ তারিখ ভোর থেকে তার ডিউটি শুরু হবে এবং লক্ষ্মীপুর-ঢাকা প্রতিটি ট্রিপের
জন্য ৪০০ টাকা করে পাবে। টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিষয়ে চালক নাহিদের সঙ্গে কথা বলার জন্য
অনুরোধ করেন।”
পুলিশ সুপার বলেন, “ইউসুফ
দাবি করেন, ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত পুরনো সহকারী শিপনের সঙ্গে কাজ শিখতে শিখতে
এসেছে তাই তাকেও পারিশ্রামিক দিতে হবে। এ নিয়ে প্রথমে তাদের তক-বিতর্ক এবং পরে হাতাহাতি
হয়।
“এক পর্যায়ে গাড়িতে থাকা
লোহার রেঞ্জ দিয়ে ইউসুফ সুপারভাইজার লিটনের মাথায় কয়েক বার আঘাত করলে গাড়ির ভেতরই তিনি
মারা যান।”
এরপর ইউসুফ গাড়ির সিটের ওপর
লিটনকে বসিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় লিটনের স্ত্রী হালিমা আক্তার
ঘটনার দিন দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও খবর