এ সময় সংবাদ সংগ্রহের চেষ্টা করলে নুরুল হুদা তাদের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লা নগরী সংলগ্ন নোয়াপাড়া এলাকায় কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
লাঞ্ছিত দুই সাংবাদিক হলেন সাপ্তাহিক দুর্নীতির সন্ধানে পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম ওরফে ম্যাক রানা ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার প্রতিনিধি মো. সাফি।
হামলার শিকার তিন সেবা গ্রহীতার একজন মো. সাকিব। তার বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায়।
সাকিব সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার সকালে গিয়েছিলেন পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য। পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন অফিসের নিচতলায়।
“চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ক্লান্ত হয়ে পাশে থাকা একটি চেয়ারে বসি। আমার সঙ্গে আরও দুইজন সেবা গ্রহীতাও বসেন। এগুলো এক কর্মকর্তার টেবিলের পাশে রাখা চেয়ার ছিল।
“দুপুর ১২টার দিকে পাসপোর্ট অফিসের ডিডি মো. নুরুল হুদা নিচে নেমে এসে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে সেবা গ্রহীতাদের পেটাতে থাকেন। চেয়ার ভেঙে গেলে ওই সেবা গ্রহীতাদের চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন তিনি।”
আরেক ভুক্তভোগী মোহাম্মদ হাসান বলেন, “আমাদের কোনো কথা না বলেই পেটাতে থাকেন তিনি। অথচ তিনি বললেই আমরা উঠে যেতাম। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে সংবাদকর্মী রকিবুল ইসলাম রানা ও মো. সাফির সঙ্গে খারাপ অসদাচরণ করেন। তিনি একজন সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোন নিয়ে যান।”
ঘটনার খবর পেয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান কোতোয়ালি মডেল থানার সহিদুর রহমান ও পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর ঘটনাস্থলে যান।
কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। পরে তিনি সাংবাদিকের মোবাইলফোন ফেরত দিয়েছেন। আর সেবা গ্রহীতাকে মারধরের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।
সাংবাদিক ম্যাক রানা বলেন, “আমরা টোকেন নিয়ে নতুন পাসপোর্ট আনার জন্য পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলাম। ওই সময় দেখি, পাসপোর্ট অফিসের ডিডি আমার কিছুটা সামনে তিন-চারজন সেবা গ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে পেটাচ্ছেন।
“তখন জানতে চাইলে ভুক্তভোগীরা জানান, তারা ভুল করে অফিসের চেয়ারে বসেছিলেন। এজন্য তাদের পেটানো হয়। ঘটনার বিষয়ে পাসপোর্টের ডিডির কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাদের সঙ্গে খারাপ করেন এবং সাফির মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেন।”
সাংবাদিক মো. সাফি বলেন, “আমি আমার পাসপোর্টের কাজে সেখানে গিয়েছিলাম। সেবা গ্রহীতাদের চেয়ার দিয়ে পেটানোর ঘটনা দেখে পাসপোর্টের ডিডির কাছে কারণ জানতে চাই। তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন এবং পুলিশ ও আনসার দিয়ে হেনস্তা করান। ৩ ঘণ্টা পর পুলিশের এক ঊর্ধ্বতর্ন কর্মকর্তা আমার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে দেন।
এসব বিষয়ে কুমিল্লা আঞ্চলিক পার্সপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. নুরুল হুদা বলেন, “আমি কাউকে মারধর করিনি। আর সাংবাদিক আমার অনুমতি না নিয়ে ভিডিও করায় মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছি। পরে আবার ফেরত দিয়েছি।
এক পর্যায়ে সিসিটিভির ভিডিও টেজ দেখতে চাইলে এই কর্মকর্তা রাগান্বিত হয়ে বলেন, “আমি কারও কাছে বক্তব্য দিতে বাধ্য নই। আপনি যা পারেন লিখেন।”