সোমবার গুলশানের লেকসোর হোটেলে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “প্রতিদিন মানুষের অধিকার নিয়ে মানুষ কথা বলার চেষ্টা করছে, বলতে পারছে না। তাকিয়ে দেখুন চার দিকে একটা ভয়াবহ রকমের… একটা অক্টোপাসের মত… সমস্ত কিছু দম বন্ধ করার একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে।”
বিএনপির সাবেক সাংসদ ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ১০ বছর পূর্তিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস। সরকারই তাকে ‘গুম’ করেছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি।
আলোচনা সভায় দেখানো একটি ভিডিও চিত্রে বিএনপির ৬০০ এর বেশি নেতাকর্মীকে ‘গুম করা’ অভিযোগ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যারা গুম হয়ে গেছেন, আমি জানি না- তারা আমাদের কাছে ফিরে আসবে কিনা। আমরা প্রতি মুহূর্তে প্রার্থনা করি, আল্লাহর কাছে দোয়া চাই, তারা যেন ফিরে আসেন। আর যারা খুন হয়ে গেছে, যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে যে, তাদের পরিবার-পরিজনদের একই অবস্থা।
“আমাদের গুম হয়ে যাওয়া পরিবারগুলো আছেন, তাদের স্বজনদের কথায় আমরা কষ্ট পেলেও অনুপ্রাণিত হই। তারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, এখনও করে যাচ্ছেন, সেটা আমাদেরকে এই সংগ্রামে আমাদের এই যুদ্ধে সাহস যোগাবে এবং আমরা সামনের দিকে আরও এগিয়ে গিয়ে সফল হতে পারব।”
ওই পরিবারগুলোর পাশে থাকার কথা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুম হওয়া প্রত্যেক পরিবারের খবর রাখেন। আমাদের মানবাধিকার সেল তারা চেষ্টা করে বিষয়টাকে আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে এসে কাজ করার জন্যে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই আমাদের দেশকে রক্ষা করবার জন্য, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার জন্য, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরে পাবার জন্য এবং গুম হয়ে যাওয়া সন্তানদের ফিরে পাওয়ার জন্য।
“একটা সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে নিয়ে আসি, যেখানে জবাবদিহিতা থাকবে… এই ধরনের কোনো মা কাঁদবে না, কোনো সন্তান তার বাবাকে খুঁজবে না- এই পরিবেশ আমরা তৈরি করি।”
‘ইলিয়াস আলীসহ সকল গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাও’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ-অধিকার পরিষদের আহবায়ক রেজা কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।