ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের রেলিগেশন পর্বের প্রথম ম্যাচে ৮৫ রানে জিতেছে খেলাঘর। সোমবার ২৯০ রানের লক্ষ্য দিয়ে সিটি ক্লাবকে থামিয়ে দিয়েছে তারা ২০৪ রানে।
খেলাঘরের জয়ের নায়ক অমিত হাসান খেলেন ৯ চারে ১০১ রানের ইনিংস। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। ওপেনিংয়ে নেমে ৫ চারে ৪৯ রান করেন ইলিয়াস সানি। ভারতের শচিন বেবির ব্যাট থেকে আসে ৩ চারে ৪৬ রান।
ফতুল্লার খান সাহেব উসমান আলি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে হাসানুজ্জামানকে দ্রুত হারায় খেলাঘর। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেন ইলিয়াস ও অমিত হাসান। দেখেশুনে খেলে দুইজনে গড়েন ১৩৫ বলে ১০৩ রানের জুটি।
অমিত হাসান ৭৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করলেও ইলিয়াস পারেননি এক রানের জন্য। পরে অমিত হাসানকে সঙ্গ দেন শচিন বেবি। জমে ওঠে এই দুইজনের জুটিও।
১০৮ বলে অমিত হাসান কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন। এরপর অবশ্য টেনে নিতে পারেননি তিনি ইনিংস। শাহরিয়ার আলমের বলে ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। ভাঙে ৬২ বলে ৬৫ রানে জুটি।
২০২১-২২ মৌসুমটা যেন স্বপ্নের মতো কাটছে অমিত হাসানের। প্রথম শ্রেণির দুই টুর্নামেন্ট জাতীয় ক্রিকেট লিগ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে করেছেন দুটি করে সেঞ্চুরি। এবারের প্রিমিয়ার লিগের প্রথম রাউন্ডের পরও আবার পেলেন তিনি শতকের উষ্ণ ছোঁয়া।
লিগের চলমান আসরে এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচ খেলে ২ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে ৬২.৮৮ গড়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৬৬ রান করেছেন অমিত হাসান।
পঞ্চাশের আগে শচিন বেবির স্টাম্প এলোমেলো করে দেন পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার উসমান খালিদ। দ্রুত রান তোলায় মন দেওয়া সালমান হোসেনও হন তার বলে বোল্ড।
শেষ দিকে এক ছক্কা ও ৪ চারে ১১ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন প্রিতম কুমার।
সিটি ক্লাবের হয়ে ৬১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন খালিদ। ৫৩ রান খরচায় তিনটি শিকার শাহরিয়ার আলমের।
সিটি ক্লাবের বিপক্ষে ১০১ রানের ইনিংস খেলেছেন অমিত হাসান।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই মাসুম খানের বল এলবিডব্লিউ হয়ে যান শাহরিয়ার কমল। ডানহাতি এই পেসার টিকতে দেননি জাকিরুল আহমেদকেও। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে ৩৩ রান করে ফেরেন ওপেনার তৌফিক খান।
মইনুল ইসলাম, আশিক উল আলমরা খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। সতীর্থদের ব্যর্থতায় এদিনও দলকে টানেন জাওয়াদ রোয়েন। সিটি ক্লাবের অধিনায়ক এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে ফিফটি করেন ৫২ বলে। সবশেষ চার ম্যাচে এটা তার তৃতীয় পঞ্চাশ।
২ ছক্কা ও ৩ চারে ৫৪ রান করে শেষ হয় রোয়েনের লড়াই। বোল্ড হন তিনি শচিনের অফ স্পিনে।
সিটি ক্লাবের হয়ে ফিফটি ওই একটিই। দলটির ইনিংসে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি নেই একটিও। চোটের কারণে খালিদ ব্যাটিংয়ে না নামলে ১৪ বল আগেই শেষ হয়ে যায় সিটি ক্লাবের ইনিংস।
খেলাঘরের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মাসুম। দুটি করে প্রাপ্তি টিপু সুলতান ও শচিনের।
এই জয়ে অবনমন এড়ানোর সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল খেলাঘর। অবশ্য এর জন্য নিজেদের পরের ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই দলটির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ৫০ ওভারে ২৮৯/৮ (হাসানুজ্জামান ১৩, ইলিয়াস ৪৯, অমিত হাসান ১০১, শচিন বেবি ৪৬, অমিত মজুমদার ৮, সালমান ২০, মাসুম ৬, প্রিতম ২৮*, নুর আলম ৬, ইফতেখার ১*; হালিম ৮-১-৪১-০, শাহরিয়ার ৯-০-৫৩-৩, খালিদ ১০-০-৬১-৪, রোয়েন ১০-১-৫২-০, রাজিবুল ৯-০-৪৯-১, মইনুল ৩-০-২১-০, নাজমুল ১-০-৬-০)
সিটি ক্লাব: ৪৭.৪ ওভারে ২০৪/৯ (তৌফিক ৩৩, কমল ০, জাকিরুল ১২, মইনুল ৩৩, আশিক ১৪, রোয়েন ৫৪, নাজমুল ৮, রাজিবুল ১৯, শাহরিয়ার ১৯, হালিম ২*, খালিদ আহত; মাসুম ৮-১-৪২-৩, নুর আলম ৯-১-৩৯-০, টিপু ১০-০-৪৩-২, সালমান ৫-০-১৭-০, ইফতেখার ১০-১-৩২-১, ইলিয়াস ৩-০-২৩-০, শচিন ২.৪-০-৫-২)
ফল: খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি ৮৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: অমিত হাসান