তবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবার প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করে ‘হার পাওয়ার প্রকল্প’ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার শেরেবাংলা
নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব
করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে সংবাদ
সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “শি প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর
সামনে উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির সাহায্যে নারীর ক্ষমতায়নের
জন্য গৃহীত এ প্রকল্পটি আসলে শি (she) নয়, হার (her) হওয়া উচিৎ। তখন উপস্থিত
প্রকল্প কর্তৃপক্ষও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করলে প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন
করে ‘হার পাওয়ার প্রকল্প:
প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন’ নামে পরিবর্তন করা হয়।”
তথ্য প্রযুক্তির
সর্বোত্তম নিরাপদ ব্যবহার করে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীদের আত্ম-কর্মসংস্থানের
সুযোগ সৃষ্টি ও উদ্যোক্তা হিসেবে তাদের টেকসই ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এই প্রকল্পের
উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি।
২৫০ কোটি টাকা
ব্যয়ে দেশের ৪৪টি জেলার ১৩০ উপজেলায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পটি
বাস্তবায়ন করা হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে গৃহীত এ প্রকল্পটি
বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর।
এর আগে প্রায় ৮২
কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়
বাস্তবায়িত হয়েছে। এবার প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী
বলেন, এ প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের ১৩০ উপজেলার ২৬ হাজার ৩২৫ জন আগ্রহী নারী
প্রযুক্তিবিদকে অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরমধ্যে ২৫ হাজার ১২৫ জনকে
কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি কেনার জন্য অনুদান দেওয়া হবে।
মান্নান বলেন, “ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের অন্যতম
উপায় হচ্ছে আইসিটি খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে মানুষের কাছে মানুষের কাছে
তথ্য প্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দেওয়া। তথ্য প্রযুক্তি খাতে নারীর অংশগ্রহণ এবং দক্ষতা
উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।”
এদিনের একনেক সভায়
মোট ৪ হাজার ৫৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ের ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে
৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে
২৪৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।
প্রকল্পগুলো
>> ‘দুগ্ধ ঘাটতি উপজেলায় দুগ্ধ
সমবায়ের কার্যক্রম সম্প্রসারণ’; ব্যয় ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
>> ‘কালিগঙ্গা নদীর ভাঙন হতে ঢাকা
জেলার নবাবগঞ্জ এবং মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া, ঘিওর, মানিকগঞ্জ সদর এবং সিংগাইর
উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রক্ষা কল্পে নদীতীর সংরক্ষণ’; ব্যয় ৬৮৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
>> ‘নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার
জলাবদ্ধতা নিরসন’; ব্যয় ১৪৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
>> চট্টগ্রামের
‘বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে
কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ ২য় সংশোধিত; ব্যয় ১০৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২
লাখ টাকা।
>> ‘ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মেশিনারিজ সরবরাহ’; ব্যয় ১২২ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
>> ‘ভারতের সাথে রেল সংযোগ
স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ’(১ম সংশোধিত); ব্যয় ৬০ কোটি ৫২
লাখ টাকা বেড়ে হচ্ছে ১৪০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
>> ‘সীমান্ত সড়ক (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি
ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা- ১ম পর্যায়); প্রকল্পটিতে ২ হাজার ১৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা
বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৮৭৪ কোটি ৩২ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
>> ‘জেলা মহাসড়কসমুহ যথযথ মান ও
প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (কুমিল্লা জোন); ব্যয় ৭৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা বাড়িয়ে ১ম সংশোধন
করা হয়েছে।
>> ‘নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক
মহসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন; এর ব্যয় ৯৫ কোটি ৯২ লাখ বাড়িয়ে ৪৩৯ কোটি ৫২ লাখ টাকায়
উন্নীত করে প্রথম বারের মতো সংশোধন করা হয়েছে।
>> ‘পানগুছি নদীর ভাঙন হতে
বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলা সদর ও সংলগ্ন এলাকার সংরক্ষণ এবং বিশাখা নদী
পুনখনন’; ব্যয় ৬৫৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।