ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া সোমবার পূর্বাঞ্চলে ‘দনবাসের যুদ্ধ’ শুরু করেছে আর ‘রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বেশ বড় একটি অংশ এখন এই আক্রমণে মনোনিবেশ করেছে’।
“রাশিয়া সেখানে যতো সেনাই পাঠাক আমরা লড়াই করবো। আমরা আমাদের রক্ষা করবো,” এক ভিডিও বক্তৃতায় বলেছেন তিনি।
জেলেনস্কি প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়েরমাক রাশিয়ার এ আক্রমণকে ‘যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপ’ বলে অভিহিত করে তাদের বাহিনীগুলো এটি প্রতিহত করবে বলে ইউক্রেইনীয়দের আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর বিশ্বাস রাখুন, এটি খুব শক্তিশালী।”
ইউক্রেইনের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে দোনেৎস্কর ফ্রন্ট লাইন বরাবর ধারাবাহিক বিস্ফোরণের খবর এসেছে, যার কয়েকটি বেশ শক্তিশালী ছিল; পাশাপাশি মারাঙ্কা, স্লাভিয়ানস্কা ও ক্রামাতোর্স্কে গোলাবর্ষণের খবর দিয়েছে তারা।
ইউক্রেইনের স্থানীয় কর্মকর্তারা ও স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ, দক্ষিণে মাইকোলায়িভ ও দক্ষিণপূর্বে জাপোরিজজিয়াতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে এসব প্রতিবেদন যাচাই করে দেখতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
ইউক্রেইনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের মহাসচিব অলেক্সি দানিলভ জানিয়েছেন, সোমবার সকালে রাশিয়ার বাহিনীগুলো ‘দোনেৎস্ক, লুহানস্ক ও খারকিভ অঞ্চলে প্রায় পুরো ফ্রন্ট লাইনজুড়ে’ ইউক্রেইনীয় প্রতিরক্ষা ভেদ করার চেষ্টা করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাতে তারা ইউক্রেইনের কয়েকশ সামরিক লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।
রাশিয়া উত্তরাঞ্চলে ইউক্রেইনের বাহিনীগুলোর তুমুল প্রতিরোধের মুখে সেখান থেকে পিছু হটে এসে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের দুটি প্রদেশে স্থল আক্রমণ চালানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে, পাশাপাশি ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভসহ অন্যান্য লক্ষ্যস্থলগুলোতেও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে।
ইউক্রেইনের শিল্প সম্পদের, বিশেষ করে কয়লা ও ইস্পাত শিল্পের, বেশিরভাগ আছে দনবাসে। রাশিয়াপন্থি ইউক্রেইনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এখানকার দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে দুটি ‘প্রজাতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে ইউক্রেইনের যুদ্ধে বেসামরিক মৃত্যু ২ হাজার ছাড়িয়ে ২০৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।
যুদ্ধের কারণে প্রায় ৪০ লাখ ইউক্রেইনীয় দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।