ক্যাটাগরি

হলে থাকার ‘আশ্বাসে’ মুক্ত অধ্যক্ষ, শিক্ষার্থীকে দেখতে গেলেন স্কয়ারে

ক্যাম্পাস থেকে রাত সাড়ে আটটার দিকে বেরিয়ে তিনি পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেনকে দেখতে যান। কলেজের ব্যবস্থাপনা চতুর্থ বর্ষের এ ছাত্র ওই হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।

কলেজ ও হল বন্ধের ঘোষণা আসার পর মঙ্গলবার বিকাল সোয়া তিনটা থেকে ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষের কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কার্যালয় ঘিরে রাখে তারা।

পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে হলে থাকার আশ্বাস দেওয়ার পর অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে সড়ে যান শিক্ষার্থীরা। এরপর অধ্যক্ষ মইনূল কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

অধ্যক্ষ যখন ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তখনও ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস এবং নিউ মার্কেট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ক্যম্পাসের সার্বিক অবস্থা বিষয়ে জানতে চাইলে রাত ৯টার দিকে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও থমথমে পরিবেশ। দুই পক্ষই রাস্তায় আছে, পুলিশও আছে। তবে আপাত দৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে না।”

অবরুদ্ধ অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে ঘেরাও তুলে দেওয়ার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার আমাদের বলেছেন, মন্ত্রনালয়ের দেওয়া সিদ্ধান্তের কথা জানানো দরকার, তাই আমাদের বলেছেন, নোটিশ করেছেন। আমরা হলে থাকলে কোনো সমস্যা নাই। স্যার বলেছেন তোমরা হলে থাক।”


ঢাকা কলেজের হল বন্ধের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ


সংঘর্ষ: ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাস খালি করার নির্দেশ


সংঘর্ষের পর ঢাকা কলেজের মঙ্গলবারের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

কলেজের আরেক শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক অহিদুজ্জামান বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে, এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসেই থাকব। শিক্ষার্থীরা হল ছাড়বে না। আমরা অধ্যক্ষকে বলেছি সুন্দরভাবে সমাধান করতে।”

ছাত্রদের হল না ছাড়ার বিষয়টি কিছুটা স্বীকার করে অধ্যক্ষ মইনূল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্ররা আমাকে বলেছে, তারা হল ছাড়বে না। কলেজ ও হল বন্ধের বিষয়টা একেবারেই মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত, আমি শুধু ঘোষণা দিয়েছি।”

ছাত্ররা তাকে অবরুদ্ধ করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।

ছাত্রদের হল না ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে ছাত্রদের কথা হয়েছে, তারাও আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।”

আপনি অবরুদ্ধ কি না জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, “ছাত্রদের সঙ্গে ঝামেলা, আমি কী বাসায় বসে থাকব। আমি আমার অফিসে বসে সবার সঙ্গে কথা বলছি, সার্বিক বিষয় খোঁজ খবর নিয়েছি। এখন স্কয়ার হাসপাতালে একজন ছাত্র অসুস্থ তাকে দেখতে যাচ্ছি।

“ছাত্ররা অবরোধ তুলে নেয়ার পর আমি তাদের সাথে আমাদের আহত ছাত্রদের দেখতে এসেছি। তাদের শারীরিক অবস্থার খবরাখবর নিচ্ছি।”

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও আহত শিক্ষার্থীতে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে যান।

সোমবার নিউ মার্কেটে একটি খাবারের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিতণ্ডার জের ধরে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

রাত ১২টা থেকে শুরু করে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া চলে। শেষ পর্যন্ত রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাতের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্ররা মানববন্ধন করতে আবার রাস্তায় জড়ো হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরাও বেরিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর ঢিলযুদ্ধ চলে বিকাল পর্যন্ত, পুরো নিউ মার্কেট এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।