গাছে ফুল ফোটে, ফল হয়। সে ফল পাখি খায়। পাখি কিচিমিচি ডাকে। পুরো বন মাতিয়ে রাখে।
বনের ঠিক মাঝখানে একটা বয়সী আমগাছ। প্রচুর ডাল এদিক ওদিক ছড়িয়ে আছে। এই বয়সী আমগাছেই এক কাঠবিড়ালীর বাস। বনের সবাই বলে ‘কাঠুমের বাড়ি’। বিশাল এই আমগাছে ছুটে বেড়ায় ওরা। তারপর এ গাছ থেকে ও গাছে ছুটে বেড়ায়। পাকা পাকা ফল খায়। আর কাঠুম ছানার জন্য নিয়ে আসে।
কিন্তু সব সময় চিন্তা থাকে কাঠুম ছানার জন্য। ভয়ানক দুষ্টু কাঠুম ছানা। একদণ্ডও স্থির থাকতে পারে না। সবসময় ছুট আর ছুট। একটুও বসে থাকতে পারে না। মা কাঠুম সব সময় বলে একটু স্থির হয়ে বোস। এত ছোটাছুটি করা ভাল না। কে শোনে কার কথা। মা কাঠুম আবার বলে এই আমগাছটাতে হলো আমাদের বাড়ি, এখান থেকে কোথাও চলে যাস না যেন।
কিন্তু কাঠুম ছানার মন মানে না। সে দেখে দূরে লালমাটির রাস্তা। রাস্তার দু’পাশে সবুজ ঝোঁপ। ওখানে হরিণছানারা ছোটাছুটি করছে। ঘাসের বনে সাদা খরগোশ খেলা করছে। ওই যে পিঠে কাঁটাওয়ালা সজারু দৌড়ে যাচ্ছে। কারও সাথে কথা বলার যেন সময় নেই। ইস্, কত মজা করছে সবাই। আর এখানে শুধু মানা। এটা করো না। ওটা করো না। এখান থেকে বাইরে যাওয়া যাবে না। কিন্তু কাঠুম ছানার বাইরে যেতে মন চায়।
কাঠুমরা যে আমগাছে বাস করে সেই আমগাছের গুড়ির খোঁড়লে বনমোরগের বাসা। লাল ঝুঁটিওয়ালা বনমোরগ ভীষণ সাহসী। সে হলো বনমোরগ সর্দার। বনমুরগী, বনমোরগ আর ওদের তিনটে ছানা নিয়ে পরিবার।
একদিন ঘটনা ঘটল। কাঠুম ছানা গাছবাড়ি থেকে নেমে পড়ল। এক লাফে গিয়ে পড়ল লালমাটির রাস্তায়। আহ্, কি মজা! কাঠুম ছানা লালমাটির রাস্তায় লাফাতে লাগল। দৌড়াতে লাগল। কাঠুমকে দেখে হরিণছানা, খরগোশছানা সব ঝোঁপ থেকে বেরিয়ে এলো। তারপর লালমাটির রাস্তায় খেলা শুরু করল। গাছবাড়ির মগডাল থেকে ওদের দেখছিল বনমোরগ।
হঠাৎ দেখলো একটা পাজি শেয়াল ছানাদের দিকে এগিয়ে আসছে। এই বনের সবচেয়ে পাজি শেয়াল। পাজি শেয়ালের হাত থেকে ওদের বাঁচাতে হলে সাহস করে এগিয়ে যেতে হবে। বনমোরগ হঠাৎ খুব জোরে কুক কুরু কুক বলে ডেকে উঠল। তারপর উড়াল দিয়ে পড়ল একদম পাজি শেয়ালের সামনে। গলা ফুলিয়ে ডানা ছড়িয়ে এগিয়ে গেল পাজি শেয়ালের দিকে। ছানারা সব বনমোরগের পেছনে লুকিয়ে পড়ল।
বনমোরগের ডাক শুনে আরও বনমোরগ চারদিকে থেকে উড়ে আসতে লাগল। সবাই ডানা ঝাঁপটিয়ে গলা ফুলিয়ে পাজি শেয়ালের দিকে এগিয়ে গেল। পাজি শেয়ালটা এরকম দেখে বেশ ভড়কে গেল। একটু পর সেখান থেকে কেটে পড়ল।
এবার বনমোরগ সর্দার বলল, যাও, ছানারা, যার যার বাড়ি চলে যাও। একা একা বাড়ির বাইরে আসবে না। তাতে বিপদ হতে পারে। ছানারা সব একসাথে বলে ওঠল, আচ্ছা। কাঠুম ছানা ফিরে চলল ওর গাছবাড়িতে।
কিডজ পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!