স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর ৫টায় সদরের মোবারকপুর, শ্রীবরদীর লংগরপাড়া, পশ্চিম ঝিনিয়া, খরিয়া, কুরুয়া, কুড়িকাহনীয়া, রহমতপুর ও ঝিনাইগাতীর জগৎপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে ঝড় এবং একইসঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়।
ঝড়ে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহিত কুমার দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রাথমিকভাবে সদর উপজেলার কিছু অংশ, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ধান শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।“
কৃষকরা জানিয়েছেন, পাকা ধান শিলার আঘাতে ঝড়ে পড়েছে এবং আধাপাকা ধান ঝড়ে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু এলাকার নুয়ে পড়া ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
কৃষক সবেমাত্র ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তোলা শুরু করেছে। এরই মধ্যে শিলাবৃষ্টি তাদের অনেক ক্ষতি করেছে। কোনো কোনো কৃষক শিলাবৃষ্টির কারণে এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।
ফসল হারিয়ে কৃষক এখন দিশেহারা। ধারদেনা কিভাবে পরিশোধ করবেন, পরিবার কীভাবে চলবে এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত।
এদিকে শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে। বিভিন্ন মুরগির খামারেরও ক্ষতি হয়েছে।
বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় এবং তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ভোর থেকেই শহর ও গ্রামের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাত ঘণ্টা পর কিছু কিছু এলাকায় চালু হলেও এখনও অনেক এলাকা রয়েছে বিদ্যুৎবিহীন।
শ্রীবরদী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নবিকুল ইসলাম, তমিজ উদ্দিন, মমতাজ মিয়া, ইয়াছিন মিয়া, রাহেলা বেগম, সাজেদা খাতুন ও বকুল বেগম জানান, শিলাবৃষ্টিতে তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
একমুঠো ধানও ঘরে তোলা সম্ভব হবে না।
পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান জানান, বোরো আবাদ দিয়েই সারা বছরের খাবার চলে। শিল ও ঝড়ে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তার আর কোনো উপায় নেই।