অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন হানিন। আর,
মানবাধিকার কর্মীরা দাবি করছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের প্রভাব বন্ধ করতেই
একের পর এক নেমে আসছে এমন সাজা।
এরই মধ্যে মিশরের বিভিন্ন নারী ইনফ্লুয়েন্সারকে
দেশটির আদালত নানা মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে বলে উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
২০২০ সাল থেকে হোসামসহ অন্তত ১১ জন নারী
ইনফ্লুয়েন্সার একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে তাদের লাখ লাখ
অনুসারী রয়েছে। এই বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা, বাক-স্বাধীনতা, বৈষম্যহীনতা
এবং শারীরিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
টিকটকে নয় লাখের বেশী অনুসারী রয়েছে
হোসামের। সেখানে গানের ‘লিপ সিঙ্ক’ এবং নাচের ভিডিও পোস্ট করে এ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন
কায়রো ইউনিভার্সিটির এই শিক্ষার্থী।
২০২০ সালের এপ্রিলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ‘লাইকি’-তে নারী অনুসারীদের
আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। যেখানে তিনি বলেছিলেন, লাইভ ভিডিও সম্প্রচার
করে অর্থ আয় করতে পারবেন তারা।
ওই বছরের জুলাইয়ে, হোসাম এবং আরেকজন জনপ্রিয় টিকটকার মাওয়াদা আল-আদহামের
বিরুদ্ধে ‘পারিবারিক মূল্যবোধ ও নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ’ এনে তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড
এবং তিন লাখ মিসরীয় পাউন্ড (১৬ হাজার একশ ডলার) অর্থদণ্ড দেয় কায়রোর অর্থ আদালত।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে মামলায় হোসামকে খালাস এবং আদহামের কারাদণ্ড আদালত
খারিজ করে এবং পরের মাসে তাদের কারামুক্তি আদেশও আসে। এর পরপরই তাদের বিরুদ্ধে মানব
পাচারের গুরুতর অভিযোগ নিয়ে আসে কর্তৃপক্ষ।
আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে মিশরীয়
‘সমাজের নীতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজে নারীদের ব্যবহার’ করার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে।
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বিশেষ
একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তাদের। লাইকিতে সেই দলের প্রচারণা করেছেন হোসাম এবং
ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে তাদের ভিডিও পোস্ট করেছেন আদহাম।
মামলার শুনানির দিন তারা দুইজনই দোষী
সাব্যস্ত হন। শুনানিতে অনুপস্থিত হোসামেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং উপস্থিত আদহামকে ৬
বছরের কারাদণ্ড দেয় কায়রোর ফৌজদারী আদালত।
আটকের আগে সামাজিক মাধ্যমে একটি অশ্রুসিক্ত
ভিডিও পোস্ট করেন হোসাম। ভিডিওতে হোসাম বলেছিলেন,
তিনি অনৈতিক কিছু করেননি, যে তার এসব প্রাপ্য এবং এতে কারো ক্ষতিও হয়নি।
“মিসরের বিচার বিভাগ এমন একটি বিষয়কে অপরাধ বলছে, যেটি গোটা বিশ্বে
ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রতিদিনই করে থাকে।” –রায়টির বিষয়ে টুইট করেছেন মার্কিন মানবাধিকার
বিষয়ক আইনজীবি ও ‘তাহরির ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট পলিসি’র পরিচালক মাই এল-সাদানি।
“এখানে তারা অন্যদের সঙ্গে কাজ করতে আমন্ত্রণ জানায় এবং তাদের টিকটক
কার্যক্রম থেকে অর্থ আয় করে।”
হোসামের মামলা পুনর্বিচারের অনুমতি মিললেও,
একই আদালত সোমবার পুনরায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। যেখানে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি
দুই লাখ মিসরীয় পাউন্ড (১০ হাজার আটশ ডলার) অর্থদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।