এ সপ্তাহেই ওই চুক্তি সই হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীনের সঙ্গে চুক্তি আটকাতে অস্ট্রেলিয়া জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া এখন পর্যন্ত সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ।
শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, প্রশান্ত মহাসাগরে আধিপত্য ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রও চীনের সঙ্গে হওয়া ওই চুক্তি আটকাতে চেয়েছে।
কিন্তু সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী মানাসেহ সোগাভারে সব চাপ উপেক্ষা করে চীনের সঙ্গে নিরপত্তা চুক্তিটি করেন। তিনি বলেন, তাদের চুক্তি ওই অঞ্চলের ‘শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করবে না’।
তিনি আরও বলেন, ‘‘চুক্তিটি ঐতিহ্যগত মিত্রদের লক্ষ্য করে নয় বরং আমাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা পরিস্থিতি লক্ষ্য করে করা হয়েছে।”
চুক্তিতে কী কী শর্ত আছে সে বিষয়ে তিনি কিছু প্রকাশ করেননি। তবে জোর দিয়ে বলেছেন, “সব কিছু জেনে বুঝে এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে চুক্তিটি করা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী সোগাভারে চুক্তির শর্ত প্রকাশ না করলেও সেটির একটি খসড়া ফাঁস হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার যেটির সত্যতা যাচাই করেছে।
সেখান বলা আছে, চীনের যুদ্ধজাহাজ সলোমন দ্বীপপুঞ্জের বন্দরে ভিড়তে পারবে এবং দেশটিতে ‘সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তার জন্য’ বেইজিং নিরাপত্তা বাহিনী পাঠাতে পারে।
মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রও চূড়ান্ত চুক্তিতে ‘সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়তা দেওয়ার’ বিষয়টি উল্লেখ আছে বলে নিশ্চিত করেন।
সামাজিক নানা ইস্যু নিয়ে গত কয়েক বছরে সলোমন দ্বীপপুঞ্জে মাঝেমধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। গত নভেম্বরে রাজধানী হোনিয়ারায় প্রাণঘাতী দাঙ্গা শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার সেখানে তাদের প্রতিরক্ষাবাহিনী পাঠিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী সোগাভারের পদত্যাগের দাবিতে সেবার বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ভাংচুর চালিয়েছিল।
‘অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক নীতির সব থেকে খারাপ ব্যর্থতা’
চীনের সঙ্গে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের এই চুক্তিকে ‘গভীর হতাশাজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিস পেইন এবং প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক মন্ত্রী জেড সেসেলজা।
তারা বলেন, ‘এই চুক্তি যেভাব হয়েছে এবং সেখানে স্বচ্ছতার যে অভাব রয়েছে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন’।
অস্ট্রেলিয়ার বিরোধীদল একে দেশটির ৮০ বছরের ইতিহাসে প্রশান্ত মহাসাগর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক নীতির ‘সব থেকে খারাপ ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেছে।
নিউ জিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা একই রকমভাবে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ যে চুক্তি করেছে তাতে তার দেশ ‘গভীর মনঃক্ষুন্ন’ হয়েছে।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আবারও সলোমন দ্বীপপুঞ্জে দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৯৩ সালে দেশটিতে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।