মঙ্গলবার ঢাকার বনানীতে ওই ঘটনার পর কনস্টেবল পদমর্যাদার দুই পুলিশ সদস্যের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন।
তবে কনস্টেবল দুজনের নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “যেহেতু তদন্ত চলছে, সেহেতু তাদের বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে উপ কমিশনার কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়েছে। এটা কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়।”
বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হোটেল শেরাটন বনানীতে ইফতার পার্টি ছিল। পুলিশ সদস্যদেরও দাওয়াত ছিল। সেখানে এক মডেল এবং তার স্বামীর সঙ্গে এ ঘটনা ঘটান ওই দুই কনস্টেবল।
ঘটনার পরপরই সেই মডেল ফেইসবুক লাইভে এসে ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে সেটি মুছে ফেলে আবার লাইভে এসে জানান, তিনি এবং তার স্বামী হেঁটে একটি রেস্তোরাঁয় যাচ্ছিলেন। সেখানে ‘সিভিল ড্রেস’ পরা দুই লোক তার দিকে বাজে মন্তব্য করেন।
তার স্বামী তখন ‘চোখ তুলে ফেলার’ কথা বললে তাদের একজন বলেন, ‘তুই জানিস আমি কে?’ স্বামী তখন পরিচয় জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘পুলিশ’। এ কথা বলেই দুজন সামনে আর পেছন থেকে তার স্বামীকে মারতে শুরু করে বলে তার অভিযোগ।
ফেইসবুক লাইভে তিনি বলেন, “তারা শার্ট ছিড়ে ফেলে এবং মাথায় আঘাত করে এবং নিচে ফেলে দেয়।”
স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করতে গেলে ওই দুই ব্যক্তির একজন ওড়না টেনে ফেলে দেয় বলেও অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
তিনি বলেন, “ওই সময় আরেকজন ধাক্কা দিলে আমি গাড়ির সাথে বাড়ি খাই এবং সেই সঙ্গে আমাকে থাপড়ানো শুরু করে। আশেপাশে কেউ এগিয়ে অসেনি।”
ফেইসবুক লাইভে ওই মডেল স্বীকার করেন, ঘটনার সময় পুলিশকে তারা গালমন্দ করেছেন, সেজন্য তিনি দুঃখও প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমার মুখ খারাপ করা উচিত হয়নি। … এজন্য ভিডিওটা ডিলিট করেছি। … পুরোটাই সিচুয়েশনের জন্য; খুবই বাজে একটা সিচুয়েশন ছিল।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মডেলের স্বামী কনস্টেবল দুইজনের চোখ তুলে নেওয়ার কথা বলায় ঘটনার সূত্রপাত। আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি, সেখানে ওড়না নেওয়ার বিষয়ে মডেল যা বলেছেন তার সত্যতা পাইনি।
“তবে সার্বিক বিষয় দেখতে একটি তদন্ত কমিটি আমরা করেছি। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার নিউটন দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “একজন অতিরিক্ত উপ কমিশনারের গাড়ি চালক এবং বডিগার্ড এই দুই কনস্টেবল।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।”