এই সফরে জনসন প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি রাশিয়ার তেল এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ওপর থেকে ভারতকে নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করার প্রস্তাব দেবেন।
রাশিয়া ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর পর থেকেই মস্কোর ওপর ভারতের নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য। গত মাসে ভারত সফর করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস।
অন্যান্য পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোও ভারতকে এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়ে এসেছে। কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও সমালোচনা করেনি ভারত।
এমনকী জাতিসংঘে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবেও ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে। বিশ্বে ভারতই রাশিয়ার কাছ থেকে সবেচেয় বেশি তেল এবং অস্ত্র কেনে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমাসের শুরুতে বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে বেশি তেল কিনে ভারতের স্বার্থসিদ্ধি হবে না।
তবে জনসন ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টির অবতারণা করবেন না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র।
নয়াদিল্লিতে ‘সোসাইটি ফর পলিসি স্টাডিজ’ এর পরিচালক উদয় ভাস্কর বলেছেন, জনসন সম্মানজনকভাবে বার্র্তা দিলে ভারত সরকার সতর্কতার সঙ্গে তা শুনবে। তবে বাস্তবিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের কৌশলগত মিত্রতাকে বদলে দিতে যুক্তরাজ্যের বেশিকিছু করার নেই।
তিনি বলেন, “সমস্যা হচ্ছে, যুক্তরাজ্য রাশিয়ার ওপর ভারতের নির্ভরতার বিষয়টি সমাধান করতে পারবে না। তাদের বিক্রি করার মতো যথেষ্ট তেল কিংবা সঠিক ধরনের সামরিক সাজসরঞ্জাম নেই।”
এমনকী সম্প্রতি কয়েকবছরে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা বাড়লেও দেশটি এখনও চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তাদের অর্ধেকের বেশি অস্ত্র সরবরাহ পাওয়ার জন্য রাশিয়ার ওপরই নির্ভর করে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন ভারতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাট থেকে সফর শুরু করবেন। এই প্রথমবার কোনও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গুজরাট সফরে যাবেন।
সেখানের যুক্তরাজ্য এবং ভারত দুইদেশের মূল শিল্পে একটি বড় বিনিয়োগের ঘোষণা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঘরে বসে চাকরি বৃদ্ধির পাশাপাশি অত্যাধুনিক বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিতে নতুন সহযোগিতা নিয়ে কথা বলবেন দুই নেতা।
ভারতের সঙ্গে পাঁচ হাজার কোটি পাউন্ডের বাণিজ্যচুক্তিও পাকা হতে পারে জনসনের এই সফরে।