এমন ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের দলটির পর্তুগিজ তারকা ব্রুনো ফের্নান্দেস ক্ষমা চেয়েছেন সমর্থকদের কাছে। একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, এমন খেলার পর ক্ষমা চাওয়াও আসলে যথেষ্ট নয়।
প্রিমিয়ার লিগে মঙ্গলবার লিভারপুলের মাঠে ৪-০ গোলে হেরে যায় ইউনাইটেড। ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের বিপক্ষে দুই পর্ব মিলিয়ে মোট ৯ গোল হজম করল ইউনাইটেড, বিপরীতে গোল করতে পারেনি একটিও। মৌসুমের শুরুতে ঘরের মাঠে তারা ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল।
নিজেদের ইতিহাসে এক মৌসুমে কোনো এক দলের বিপক্ষে ইউনাইটেডকে এর চেয়ে বাজে পরিণতি বরণ করতে হয়েছিল একবারই। ১৮৯২-৯৩ মৌসুমে সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ১১-০ গোলে হেরেছিল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের দলটি।
লিভারপুলের বিপক্ষে ইউনাইটেডের বল পজেশন ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ, গোলমুখে শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে মাত্র একটি। এসব সংখ্যার বাইরে সবচেয়ে বড় হতাশার হলো, পুরো ম্যাচে তাদের মধ্যে লড়াইয়ের তাড়নাই দেখা যায়নি। স্কাই স্পোর্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যে হতাশা লুকাননি ফের্নান্দেস।
“অবশ্যই আরো একটা বাজে ফল, যাই বলি না কেন তা যথেষ্ট নয়। আমি মনে করি, ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাওয়াও যথেষ্ট নয়, কিন্তু এখন আমরা সেটাই কেবল করতে পারি।”
“আমাদের এমন পারফরম্যান্স সমর্থকদের প্রাপ্য নয়। আমাদের কাছে এর চেয়ে তাদের দাবি আরও অনেক বেশি। যেভাবে শেষ পর্যন্ত তারা আমাদের সমর্থন দিয়েছে, করতালি দিয়ে গেছে, তাদের প্রাপ্য অনেক বেশি।”
তবে ফল যাই হোক, নিজেদের প্রচেষ্টার কমতি দেখছেন না ফের্নান্দেস। সবাই নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে বলেই বিশ্বাস তার।
“আমার মনে হয়, সবাই দৌড়াচ্ছে। সব ম্যাচেই আমরা সবাই চেষ্টা করছি। কেউ নিজের জন্য এবং দলের জন্য শতভাগ দিচ্ছে না, এটা আমি ভাবতেই চাই না।”
“দলের মধ্যে আমাদের কথা বলতে হবে, কিন্তু পুরো বিষয়টা ড্রেসিং রুমের মধ্যেই রাখতে হবে। জানি যে আমরা অনেক কিছুই করতে পারিনি। কিন্তু এখন ম্যাচটা শেষ হয়ে গেছে, আমাদের এখন পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। (শনিবারের আর্সনাল ম্যাচ) আরও একটা কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে।”
অন্যদের দিকে না তাকিয়ে শুধু নিজেদের সমস্যা খুঁজে বের করার তাগিদ দিলেন পর্তুগিজ তারকা।
“লিভারপুল শিরোপার জন্য লড়ছে…আর আমরা এই মুহুর্তে কিছুর জন্যই লড়ছি না, অর্থাৎ এই জায়গায় পার্থক্যটা দেখা যাচ্ছে।”
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে ছিটকে যাওয়া ইউনাইটেড প্রিমিয়ার লিগে নেমে গেছে ছয় নম্বরে। ৩৩ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট তাদের। শীর্ষ চারে থেকে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জনের চ্যালেঞ্জ এখন তাদের সামনে।
দুই ম্যাচ কম খেলা আর্সেনাল সমান পয়েন্ট নিয়ে আছে ইউনাইটেডের ওপরে। আর টটেনহ্যাম হটস্পার ৩২ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে।
দলটির সার্বিক যে চিত্র, তাতে সে লক্ষ্য পূরণ নিয়েও আশাবাদী লোক খুব বেশি হয়তো মিলবে না। অনেকে তো এমনও বলছেন, কোনোমতে মৌসুম শেষ হলেই বাঁচে ইউনাইটেড। তবে ফের্নান্দেস সেটা মানতে নারাজ।