মঙ্গলবার রাতে সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর থানার চরক্লার্ক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার খন্দকার মো. শামীম হোসেন জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো. রিমন (২৩), মো. মহিন (২৫), মো. আকবর (২৫), মো. সুজন (২৮) ও নাঈম ওরফে বড় নাঈম (২৩)।
এদিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক ইমরান হোসেন রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আলোচিত এই ঘটনার প্রধান আসামি শুটার রিমন ও তার সহযোগী মহিউদ্দিনসহ পাঁচ জনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।”
খন্দকার মো. শামীম হোসেন জানান, গ্রেপ্তারের সময় র্যাবের সঙ্গে রিমন ও তার সহযোগীদের বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব-১১–এর একটি দল আসামিদের গ্রেপ্তারে সুবর্ণচরের চরক্লার্ক এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের বিষয় টের পেয়ে রিমন ও তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে।
“কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর র্যাব চারদিক থেকে ঘেরাও করে শিশু মামলার প্রধান আসামি মো. রিমনসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে।”
বাকি আসামিদের ধরতে তখনও অভিযান চলছিল বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
গ্রেপ্তার মো. মহিন
খন্দকার শামীম হোসেন আরও জানান, বুধবার বেলা ১১টায় নোয়াখালীতে এ ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করবে র্যাব।
গত ১৩ এপ্রিল বিকালে একমাত্র মেয়ে তাসকিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশে মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। মেয়ের জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। তবে পাশে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারে লেগে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে মেয়েকে নিয়ে আবু জাহের দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় পেছন থেকে তারা ইট ছুড়লে মাথায় আঘাত পায় তাসকিয়া। এক পর্যায়ে তারা গুলি চালালে তাসকিয়া ও আবু জাহের মাটিতে পড়ে যান।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের দুজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায় তাসকিয়া।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, এলাকায় মাটিকাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সৌদি প্রবাসী আবু জাহের দুই মাস আগে দেশে ফেরেন। জন্মের পর মেয়েকে এবারই তিনি দেখেন। মাটিকাটা নিয়ে বিরোধের সঙ্গে আবু জাহেরের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও এনিয়ে সালিশি বৈঠকে উপস্থিত থাকায় তিনি হামলাকারীদের লক্ষ্যে পরিণত হন।
ঘটনার পরদিন তাসকিয়ার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা, রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:
বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা: আরেক আসামি আটক